নীতি নৈতিকতা শ্রদ্ধাবোধ উবে গিয়ে সর্বক্ষেত্রেই শঙ্কা

নীতি নৈতিকতা শ্রদ্ধাবোধ উবে গিয়ে সর্বক্ষেত্রেই শঙ্কা

বড় ভাইয়ের অভিযোগ, ছোটভাই ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়ে ধারালো অস্ত্রের এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে। কেন? পিতার গড়ে তোলা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সুতো বিক্রির দোকানের দু বছর মেয়াদী দায়িত্ব শেষে হিসেবসহ দোকানের চাবি না দেয়ায় দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখায় নালিশ। দোকানের কর্তৃত্ব দেয়া দূরের কথা, দোকান মালিক সমিতিতে নালিশ করেছে বলেই খুনের অপচেষ্টা। অল্পের জন্য প্রাণ রক্ষা। প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়েছে।

ভাই হয়ে ভাইয়কে খুনের চেষ্টা? সমাজের হালচিত্র বিশ্লেষণে ওটা আর চমকানোর মতো কোনো ঘটনা নয়। ঘরে-বাইরে, পথে-ঘাটে প্রবীণদের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ দূরাস্ত, পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্যপরায়ণতারও অভাব পদে পদে লক্ষ্যণীয় হয়ে উঠছে। সমাজ সচেতনদের মুখে, নৈতকতার স্খলন প্রসঙ্গটি আলোচনার টেবিলে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলেও প্রতিকারের তেমন পদক্ষেপ নেই। থাকবে কী করে? প্রাথমিক সমাপনী পেরোলো কি পেরোলোনা অমনি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী খেতাব নিয়ে ডেমার মতো ফুঁসতে শুরু করলো। ভয়ঙ্কর এ প্রবণতা রুখতে কে দাঁড়াবে ফনার সামনে? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকমণ্ডলীকেও শঙ্কিত হয়ে থাকার শনি ভর করেছে। নীতিবাক্য আওড়ালে উল্টো অনিবার্য হওয়ার আশঙ্কা যেখানে সেখানে নৈতকতার স্খলন ঠেকাতে নীতির আলো জ্বালবেন কোন সাহসে। অনেকেরই অভিমত, এসবেরই কুফল এখন অন্দরমহলে। সর্বক্ষেত্রেই শঙ্কা যে সমাজে, সেই সমাজে সৎ পরামর্শক সোজা হয়ে সামনে দাঁড়াবেন কোন সাহসে!

নিজেদের যখন কর্মসংস্থান গড়ে নেয়ার মুরদ হয়নি, তখন পিতার গড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ওপর দু ভাইয়েরই নজর থাকবেই তো। চুয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার মধ্যবিত্ত পরিবারের দু ভাই একটি দোকানের কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে এখন দখল দেয়া নেয়া নিয়ে হানাহানিতে মত্ত। পেয়ে বসেছে সর্বনাশা মানসিকতায়। মিল তাল করে দু ভাই ভালো থাকার বদলে একাই নেবো সব করতে গিয়ে খুন মামলায় জড়ানোর পরিণাম বোঝাবে কে? বোকারাম সতর্ক হও, নইলে দোকান টেকানো দূরাস্ত, ভিটেই ঘুঘু চরবে!

 

wbwðZ †nvK mywPwKrmv, `~i †nvK `y‡f©vM

নিশ্চিত হোক সুচিকিৎসা, দূর হোক দুর্ভোগ

চুয়াডাঙ্গায় আবারো ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। আক্রান্তরা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হওয়ার জন্য হাসপাতালে ছুটছেন। ভর্তির পর উল্টো পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন। গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে, তা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাপতালকে চিকিৎসা কেন্দ্র বলা যায় কি-না তা দায়িত্বশীলদেরও নতুন করে ভেবে দেখার তাগিদ দেয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে মোট রোগী ধারণ ক্ষমতা ১৮ জন। মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা ১৪ জন। গতপরশু মধ্যরাত পর্যন্ত এ ওয়ার্ড দুটিতে ধারণ ক্ষমতার তিনগুনের বেশি রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। এরপরও ঠাসাঠাসি করে রোগীদের থাকাতে হচ্ছে বলে কোনো অভিযোগ, অনুযোগ নেই। যতো ক্ষোভ মূলত সৌচাগার নিয়ে দুর্ভোগ আর ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার সবই বাইরে থেকে কেনার জন্য চিরকুট ধরিয়ে দেয়া।

মহিলা মেডিসিন ওয়াডের সৌচাগারে পানি নেই, নেই আলো। পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডের সৌচাগার এতোটাই নোংড়া যে তা ব্যবহারের উপযোগী নয়। এরপর দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে জীবনরক্ষাকারী কলেরা ও খাওয়ার স্যালাইন নেই। এ অবস্থায় যখন চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব, ৪৮ ঘণ্টায় শ খানেক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তখন দুর্ভোগের মাত্রা কোথায় তা বোদ্ধাদের নিশ্চয় নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না।

দেড় বছর আগে চুয়াডাঙ্গায় গণহারে ডায়রিয়া আক্রান্তের ঘটনা দেশশুদ্ধ নড়িয়ে দেয়। এবার দু দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দেখে দায়িত্বশীলদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়া অস্বাভাবিক নয়। ফলে এবার আগে-ভাগেই ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের মূল কারণ শনাক্ত করার পাশাপাশি সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি। সৌচাগার ও পয়ঃনিষ্কাশন সমস্যা দ্রুত কাটিয়ে ওঠা দরকার।

অবশ্য গতকাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নড়ে চড়ে বসে। জীবনরক্ষার কলেরা স্যালাইন সংগ্রহ করেন। বিকেলে পর্যাপ্ত মজুদের তথ্য জানিয়ে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গায় ডায়রিয়া মাহামরি আকার রূপ নিলেও এখন আর হাসপাতালে স্যালাইনের সংকট দেখা দেবে না। সৌচাগার? ওটাও ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। বিজিবিও বাড়িয়েছে সহযোগিতার হাত। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে বয়ে এনেছে স্বস্তি।