দেশ জুড়ে অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের অপৎপরতা

 

অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সারাদেশেই ছড়িয়ে রয়েছে। নানাভাবেই শিকার খোঁজে ওরা। অজ্ঞান করে টাকাসহ মূল্যবান মালামাল হাতিয়ে নেয়াই হচ্ছে না, অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে প্রাণও হারাচ্ছেন অনেকে। দিন দিন অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে। চলছে ঈদুল আজহার ব্যস্ততা। বাস, ট্রেন ও লঞ্চে ভিড়ের মাঝে যেমন তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত তেমনই পশুহাটগুলোতেও ঘুর ঘুর করছে ওরা। গতপরশু চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের শিয়ালমারী পশুহাটেও অজ্ঞান পার্টির অপতৎপরতা পরিলক্ষিত হয়। গরুব্যবসায়ীকে অজ্ঞান করে হাতিয়ে নিয়েছে আড়াই লাখ টাকা।

 

এক সময় বড় বড় শহরে, দূরপাল্লার কোচ, ট্রেন-লঞ্চেই যাত্রী ছদ্মবেশে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা প্রতারণার ফাঁদ পাততো। এখন আন্তঃজেলা বাস থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছোট-বড় হাটবাজারেও ওদের উপস্থিতি স্পষ্ট। যেহেতু অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সঙ্ঘবদ্ধ, সেহেতু ওদের প্রতারণার কবল থেকে রক্ষা পাওয়া বেশ কঠিন। হকার সেজে চাটনি, ক্ষিরা, ডাবের পানিতে গোছিয়ে দিচ্ছে অজ্ঞান করা ওষুধ। তা খেয়ে ঢুলু ঢুলু হলেই অপরজন সহযাত্রী সেজে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা পয়সা, মূল্যবান মালামাল। সে কারণেই হাটবাজারে, রাস্তা-ঘাটে, বাস-ট্রেন-লঞ্চে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনই নয়, খাদ্যদ্রব্য কিনে খাওয়া পরিত্যাগও প্রয়োজন। অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা যে একেবারেই ধরা পড়ছে না তাও নয়। ধরা পড়লেও অনেক সময়ই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যেমন অনাগ্রহ, তেমনই আদালতে সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপনেও অবহেলার চিত্র ঘুরেফিরেই উঠে আসে। এ কারণে অজ্ঞান করে অর্থকড়ি হাতিয়ে নেয়া প্রতারকদের অধিকাংশই পার পেয়ে যায়।

 

অজ্ঞান পার্টিই শুধু নয়, সকল প্রকারের প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের লাগাতার অভিযান প্রয়োজন। অভিযানে দরকার আন্তঃজেলা সমন্বয়। যেহেতু অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটছে, সেহেতু তাদের ধরে আইনে সোপর্দ করতে হলে দরকার তাদের পিছু নেয়ার মতো সম্মিলিত সংযুক্ত অভিযান। একই সাথে দরকার তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতে উপস্থাপনের মানসিকতা। প্রতারিত হওয়া থেকে রক্ষা পেতে যেমন দরকার বাড়তি সতর্কতা, তেমনই দরকার ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।