টেলিভিশনে বিকল্প পাঠদান

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববাসী এখন নতুন এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এ চ্যালেঞ্জ কী করে সফলভাবে মোকাবেলা করা হবে তা এখনও অজানা। এ ভাইরাস মোকাবেলায় দেশে দেশে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হচ্ছে। কতদিন পর সার্বিক পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হবে, এটাই এখন বড় প্রশ্ন। নতুন এ ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন উন্নত দেশে গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্মও স্থবির হয়ে পড়েছে। বস্তুত করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের পরই সার্বিক পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। তার জন্য আমাদের কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সীমিত পরিসরে বিভিন্ন কার্যক্রম চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালু রাখার উদ্যোগ নিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।
জানা গেছে, রেকর্ড করা বিষয়ভিত্তিক লেকচার বিভিন্ন টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে। পাশাপাশি ইউটিউব ও অনলাইনে আপলোড করা হবে সেসব লেকচার। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। আপাতত ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা পাবে এই সেবা। এ লক্ষ্যে বর্তমানে সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যমের পাশাপাশি বিটিভি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কোন টেলিভিশনে কখন সেসব অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। আমরা আশা করব, বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যমগুলো এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের এসএমএস পাঠানোর চিন্তা রয়েছে। এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবাইকে করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে প্রতিরোধের বিষয়ে নানা রকম তথ্য প্রদান করা হবে। এতে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও করোনাভাইরাস বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। রুটিন করে পড়ালেখা করার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা যাতে মা-বাবা-অভিভাবকদের কাজে সাহায্য করে, সে বিষয়েও তাদের উদ্বুদ্ধ করা হবে এসএমএসের মাধ্যমে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া শিশু ও শিক্ষার্থীরা যাতে বাইরে বের হতে না পারে, এ বিষয়েও অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানানো হবে। তবে আমরা জানি, অনেক পরিবারেই টেলিভিশন নেই। এ ছাড়া উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেক হতদরিদ্র পরিবারের টেলিভিশনগুলো বন্ধ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। কঠিন পরিস্থিতিতে কোনো কোনো দরিদ্র পরিবার তাদের সন্তানদের পড়ালেখা বন্ধ করার কথাও ভাবতে পারে। সেসব দরিদ্র পরিবারের শিশুরাও যাতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *