জনতার এক স্লিপ- এই সুরে কি ঐ সুর কাটে?

আ শু বাঙ্গালী

 

জামাই-শাশুড়ির একটি চুটকি দিয়ে আজকের লেখাটা শুরু করছি। লেখার শেষে দৈনিক মাথাভাঙ্গার সম্মানিত পাঠকরা আমার মাথা ভাঙবেন না ঘোল ঢালবেন তা পরে দেখা যাবে। তবু লেখার প্রয়োজনেই তা লিখতে হলো।  জামাই-শাশুড়ির চুটকিটা এ রকম যে নতুন জামাইকে নিজ হাতে খাওয়াতে শাশুড়ি ঘরের দরজার পাশে বসে জামাইয়ের পাতে এটা-ওটা তুলে দেয়ার সময় অসাবধানে শাশুড়ির বায়ু নিষ্কাশন একটু শব্দ করে হবার পর শাশুড়ি লজ্জা ঢাকবার জন্য দরজার পাল্লা নাড়াতে থাকলে নির্বোধ জামাই (শাশুড়িদের তুষ্ট করার জন্য লেখা) বলে উঠেছিলো ঐ সুরে (দরজার পাল্লার ক্যাকু সুরে) আর ঐ সুর (বায়ু নিষ্কাশনের সুর) কাটবে না মা। এবার বলি কেন শাশুড়িকুলকে লজ্জায় ফেলে এই লেখার গৌরচন্দ্রিকা। ১৮ দলীয় জোটের তিনবারের হরতালে অগ্নিদগ্ধ হওয়া ৩৫ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে মারা গেছে ৬ জন হতভাগ্য মানুষ। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে অবশিষ্ট অগ্নিদগ্ধরা বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। এদের এই অবস্থার দায়ভার নাকি বিএনপি তথা ১৮ দলীয় জোটের নয় দায়ভার সরকারের। গতকাল প্রেসক্লাবের এক আলোচনাসভায় এই দাবি করেছেন পাকিস্তানি শান্তি কমিটির আপাদমস্তক ভদ্রমানুষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জনাব ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, তাদের অর্থাৎ বিরোধীদলের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে চালানোর জন্য নাকি সরকারের এজেন্ট এবং বিভিন্ন বাহিনীর লোকেরাই এসব গাড়ি পোড়ানো, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর প্রভৃতি করছে। ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফখরুল ইসলাম সরকারের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে হরতালের সংশ্লিষ্ট অপরাধের দায়ভার থেকে ভারমুক্ত হওয়াকে লেখার শুরুতে উল্লেখ করা শাশুড়ির বায়ু নিষ্কাশনের অপচেষ্টার সাথেই তুলনা করা যায়। কেননা মীর্জা সাহেব যতোই সরকারের ঘাড়ে হরতালে অগ্নিসংযোগের দায়ভার চাপান না কেন টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে দেশবাসী দেখেছে এই অমানবীয় কর্মগুলো কারা কারা কীভাবে করছে। জামায়াত-বিএনপির ব্যানার সামনে নিয়ে যারা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালাচ্ছে তারা যদি সরকারের এজেন্টই হয়ে থাকে তাহলে তাদের ওপর পুলিশি অ্যাকশনে যারা আহত কিংবা নিহত হয়েছে তাদের জন্য বিএনপি এই মায়াকান্না আর গায়েবানা  জানাজার নামাজ আদায় করছে কেন? মীর্জা ফখরুল ইসলামের মতো একজন ক্লিন ইমেজের মানুষের মুখ থেকে এমন মিথ্যাচার দেশবাসী আশা করে না। আশা না করলেও  দেশবাসীর কাছে এসব কথা মীর্জা সাহেবদের বলতে হয় এরই নাম রাজনীতি। মিথ্যার বেসাতি করাই যা এখনকার রাজনীতির মূল অঙ্গ। মীর্জা ফখরুল ইসলাম সাহেবকে অনুরোধ যে প্রথম আলো দৈনিক জনমত জরিপ চালিয়ে তার দলকে নব্বই শতাংশ সমর্থন পেয়েছিলো সেই দৈনিকটিকে এবার হরতাল পরবর্তী জরিপ চালিয়ে দেখতে বলুন। আমরা দেশবাসী দেখতে চাই হরতালে প্রাণ-সম্পদ বিনষ্টের কারণে বিএনপির অর্জনের হার কতোটা বেড়েছে।