জনতার একস্লিপ দেশবসীকে বাঁচান – আ.শু বাঙ্গালী

৫২’র আন্দোলন, ৫৪’র আন্দোলন, ৬৯ এবং ৭১ এ আন্দোলন হয়েছে, সেসব আন্দোলনে জাতীয় অর্জন হয়েছে। এমনকি ৯০ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও জতীয় অর্জন আছে। আর এসব আন্দোলনেও রক্ত ঝরেছে, সেই ঝরা রক্তের একটা মূল্য আছে। যারা ওইসব আন্দোলনে রক্ত দিয়েছে জাতি তাদেরকে কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে। কিন্তু এখন যে রক্ত ঝরছে সেই ঝরে যাওয়া রক্তের অর্জন কি হবে? সেই অর্জন কি দেশ ও জাতির জন্য কোনো কল্যাণ কিংবা সফলতা বয়ে আনবে?

 

জানি রাজনীতিক জনেরা এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা সুন্দর করে বক্তৃতা দিয়ে আমাদের সামনে তুলে ধরবেন। তারা তাদের মতো করে বলবেন কেননা তারাই তো হবেন এই ঝরা রক্তের সুফলভোগী। একদলের স্বেচ্ছাচারিতা আর অন্য একটি দলের একগুয়েমীর কারণে ঝরা রক্তের অর্জনে জাতির অর্জন কতোটুকু? সেকি কেবল ‘এ’ দল ‘বি’ দলকে ক্ষমতায় থাকতে কিংবা রাখতে? যদি তাই হয় তাহলে প্রশ্ন করি আর কতো রক্ত চায় ওরা? আর কতো রক্ত ঝরিয়ে আপনারা রাজনৈতিক ক্ষমতা আয়ত্বে রাখতে চান? গত তিন তিনটি হরতালে মারা গেছে ৩০ জনের মতো, আর ২৬ নভেম্বরে অবরোধের প্রথমদিনেই মারা গেছে ৭ জন। জাতীয় সম্পদ, ব্যক্তি সম্পদ কতো নষ্ট হয়েছে হচ্ছে সে পরিসংখ্যান নাইবা উল্লেখ করলাম। দেশ অচল করে দেয়ার প্রত্যয় ঘোষণার প্রথমদিনের যে তাণ্ডব সরকার সেই তাণ্ডবের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছে বলে আমাদের মনে হলো না। বরং অবরোধের প্রথমদিনে অবরোধকারীদের আক্রমণে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরই দুজন সদস্য মারা গেছেন, ঘটিত তাণ্ডবে উৎফুল্ল অবরোধকারীরা করণীয় পন্থা নিরুপণে সরকার এবং তার সমর্থকগোষ্ঠী উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায় দেশবাসী। ধর্ণায় বসেছেন দেশের সম্মানিত নাগরিকরা, সুশীলসমাজ। তারা ধর্ণা দিয়েছেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছে। নামেই মহামান্য আসলে ওটা শুধু নামেই সরকার নামীয় প্রতিষ্ঠানটিও তাকে মান্য করার বাধ্য বাধকতা নেই। দেশের ৬ জন সেরা সুশীলসমাজ সেই মহামান্যের কাছেই গিয়েছিলেন ধর্ণা দিতে। ধর্ণায় বা বলি কেন? সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ওইসব সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন তিনারা নাকি মহামান্য প্রেসিডেন্টের কাছ সঙ্কট নিরসনের কোনোরূপ রেখাও তারা তুলে ধরেননি। তা হলে ন্যাড়ার ভাষায় বলি, তবে কি ওনারা প্রেসিডেন্ট হাউসে চেহারা দেখাতে আর চা খেতে গিয়েছিলেন। প্রশ্ন করি সেই সব কেতারি সুশীলসমাজের কাছে যার কিছু করার সাংবিধানিক ক্ষমতা নেই তার কাছে না গিয়ে তারা কেন হাসিনা-খালেদার কাছে গেলেন না। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে তারা দু নেত্রীকে কিছু বলতে না পারলে দেশের নাগরিকদের তো তারা বলতে পারেন- দু নেত্রীকেই সরান-দেশবাসীকে বাঁচান।