চেকের মামলা করবেন যেভাবে

 

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক লেনদেন এবং অর্থ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি হিসেবে একে অপরকে ব্যাংক চেক প্রদান করে থাকি। পরবর্তীতে অর্থ পরিশোধের ব্যর্থতায় চেক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে হয়। আসুন আমরা বিস্তারিত জেনে নিই কখন, কিভাবে মামলা দায়ের করতে হবে।

চেক ডিস্অনার কি: চেক ডিস্অনার বলতে টাকা উঠোনোর জন্য ব্যাংকে চেক জমা দেয়া হলে ওই চেকটির বিপরীতে টাকা প্রদান করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অস্বীকৃতিকে বোঝাবে।

কী কী কারণে ডিস্অনার হয়: অপর্যাপ্ত তহবিল, চেকের মেয়াদ উত্তীর্ণ, প্রদানকারীর স্বাক্ষরের মিল না থাকা, টাকার পরিমাণ অংকে এবং কথায় মিল না থাকা, ইত্যাদি।

চেক ডিস্অনার হলে যে আইনে মামলা: যে কারণেই চেক ডিস্অনার হোক না কেন চেক গ্রহীতা চেক দাতার বিরুদ্ধে হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইন, ১৮৮১ এর ১৩৮ ধারার অধীনে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারবেন। এছাড়া দেওয়ানি আদালতে মামলা করা যায়।

কোন স্থানে মামলা করতে হবে: টাকা উঠোনোর জন্য যে ব্যাংকে চেক জমা দেয়া হয় সেই ব্যাংক যে আদালতের স্থানীয় এখতিয়ারের অধীন সেখানকার ক্ষমতাসম্পন্ন ১ম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নালিশি মামলা (সি.আর) হিসেবে দায়ের হলেও বিচার হবে দায়রা আদালতে।

মামলা করবেন যেভাবে: ১। চেকটি দাতা কর্তৃক স্বাক্ষরিত হওয়ার তারিখ হতে ৬ মাসের মধ্যে অথবা চেকটির বৈধতার মেয়াদের মধ্যে (যেটি আগে ঘটে) ব্যাংকে উপস্থাপন করতে হবে। ২। ব্যাংকে উপস্থাপনের পর যদি উহা অপর্যাপ্ত তহবিল বা অন্য কোন কারণে ডিস্অনার হয় তাহলে ওই বিষয়টি জানার ৩০ দিনের মধ্যে চেক দাতাকে লিগ্যাল নোটিশ দিতে হবে। ৩। লিগ্যাল নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে চেক দাতা গ্রহীতাকে চেকে উল্লেখিত টাকা পরিশোধ করবেন। ৪। অতঃপর ওই ৩০ দিন সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করতে হবে।

অপরাধের শাস্তি: অপরাধ প্রমাণিত হলে চেক দাতা সর্বোচ্চ ১ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা চেকে উল্লিখিত টাকার তিনগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারে।

বি.দ্র. নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নির্ধারিত পদ্ধতিতে মামলা দায়ের করতে ব্যর্থ হলে প্রতিকার হতে বঞ্চিত হতে হবে। সুতরাং চেক ডিস্অনার হলে দ্রুত আইনি সহায়তা গ্রহণ করুন।