চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিদ্যুত সরবরাহে নাজুক পরিস্থিতি

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিং তো আছেই, তার সাথে যুক্ত হয়েছে ভোল্টেজ ওঠা-নামা। ২২০ এর অনেক কম ভোল্টেজের কারণে বৈদ্যুতিক বহু সরঞ্জামাদি বিকল হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, অভিযোগ করেও বিদ্যুতের ভোল্টেজ সমস্যার সমাধান মিলছে না। অথচ যখন চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরে ৩২ কেভি সাবগ্রিড স্টেশন স্থাপন করা হয় তখন বলা হয়, এ গ্রিড সাবস্টেশন চালু হলে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে মানসম্পন্ন বিদ্যুত সরবরাহ করা সম্ভব হবে। ওই গ্রিড সাবস্টেশন সেই কবেই তো চালু হয়েছে, বিদ্যুতের মান বাড়লো কই?
এমনিতেই ছিলো লোডশেডিং, তারপর কালবোশেখি ঝড় ডেকে এনেছে সর্বনাশ। বিদ্যুত সঞ্চালন লাইনের একটি টাউয়ার ঝড়ে উপড়ে পড়ার কারণে জাতীয় গ্রিডেই বিপর্যয় নেমে এসেছে। ওই টাউয়ার কবে নাগাদ খাড়া করে ওই লাইনে স্বাভাবিকভাবে বিদ্যুত সঞ্চালন সম্ভব হবে? সরেজমিন তদন্ত করে বিভাগীয় দল বলেছে, বিদেশিদের স্থাপন করা টাউয়ার পুনরায় স্থাপন বেশ সময় সাপেক্ষ। এ সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুত সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না বলে বেশক’টি জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। তবে বিভাগীয় পদস্থ কর্তাদের দাবি সব জেলায় বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে। এ দাবি যে ডাহা মিথ্যা তা চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরবাসীর কাছে স্পষ্ট। কেননা, ঘণ্টায় ঘণ্টায় শুধু নয়, যেন মুহূর্তে মুহূর্তে লোডশেডিং যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। যেমন লোডশেডিং, তেমনই বিদ্যুতের লোভোল্টেজ সমস্যা প্রকটরূপ ধারণ করেছে। শুধু তাই নয়, রোদ-বৃষ্টির মাঝে ট্রান্সমিটার বিকল হওয়ারও যেন হিড়িক পড়েছে। এ সমস্যাও পিছু ছাড়ছে না। সেই সাথে সামান্য ঝড়ে গাছের ডাল নুয়ে বা ভেঙে সমস্যা সৃষ্টি তো রয়েছেই। এতোসব সমস্যার মধ্যেও কি বলা যায় যে, আমরা আমাদের দেশকে ডিজিটাল করার লক্ষ্যে সঠিক গতিতেই এগোচ্ছি?
কাউকে তুষ্ঠ করতে তোষামোদকারীরা ঠিকই ঘুরিয়ে ফিরেয়ে যুক্তি খাড়া করেন। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিদ্যুতের নানামুখি সমস্যা সমাধান হচ্ছে না কেন তা নিয়েও হয়তো যুক্তির ফুলঝুড়ি সাজানো থাকতে পারে। তাতে কেউ কেউ তুষ্ঠ হলেও গ্রাহক সাধারণের মধ্যে যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়তেই থাকে তা নিশ্চয় বোদ্ধাদের বুঝতে অসুবিধা হয় না, হচ্ছে না। যতো দ্রুত সুহালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, ততোই কল্যাণ। কেননা, কালক্রমে সর্বক্ষেত্রেই বেড়েছে বিদ্যুত নির্ভরশীলতা। বিদ্যুত ছাড়া থমকে থাকে উন্নয়ন, শ্বাসরুদ্ধকর হয়ে ওঠে যেন পরিবেশ।