ঘুমের সামান্য ঝিমকিই যখন প্রাণহানির ঝুঁকি

 

গোটা বিশ্বে যখন রেলযোগাযোগ ব্যবস্থার ধারাবাহিক উন্নতি হচ্ছে তখন আমাদের দেশে যেন ক্রমাবনতি। তদারকি ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের অভাবেই মূলত কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুনোর পরিকল্পনা বারবারই হোঁচট খাচ্ছে। তদারকি কর্তাদের কুম্ভঘুম তথা কর্তব্যে অবহেলার আড়ালে কি শুধুই অলসতা? তাকেও দুর্নীতি বলা যায় না? তদারকি থাকলে কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টারের ঘুম আসে কীভাবে?

 

রেলযোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ করতে শুধু রেললাইন মজবুত করলেই হয় না, রেলগাড়ি চলাচলের সাঙ্কেতিক ব্যবস্থাও নির্ভুল রাখতে হয়। আর তা পরিচালনার দায়িত্বে যারা, তাদের সামান্য কর্তব্য অবহেলায় ত্রুটি বা ভুলের কারণে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারে। প্রাণহানির শঙ্কায় রেলভ্রমণে অনাগ্রহের খেসারত দেশবাসীর ওপরই পড়ে। অবশ্যই অল্প কিছু রেলপথ সম্প্রসারণকে সার্বিক উন্নতি বলা যায় না। লোকসানের বোঝা কমিয়ে ভ্রমণ ও মালামাল বহন ব্যবস্থা বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশ রেলওয়ের জৌলুস ফেরানোই যখন প্রত্যাশা, তখন অনিয়ম কর্তব্যে অবহেলা তথা দুর্নীতি জিইয়ে রাখা কেন? দুর্নীতি রেখে আর যাই হোক উন্নতি আশা করা যায় না। কর্তব্য পালনের সময় ঘুমিয়ে পড়া কতোটুকু অন্যায়? সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন। অন্যায়ের মাত্রা স্থান-কাল-পাত্র ভেদে তারতম্য থাকলেও যেখানে ঘুমের সামান্য ঝিমকিই অসংখ্য প্রাণহানির ঝুঁকি, সেখানে কোনো অজুহাতই যে মেনে নেয়া যায় না! উপযুক্ত তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হলে স্টেশনে কর্তব্যরত থাকা অবস্থায় ঘুমিয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়বেই। বেড়েছেও।

 

গতপরশু মধ্যরাতে যাত্রীবহন করা একটি রেলগাড়ি চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের সংকেত খুঁটির বাইরে থামিয়ে রাখতে হয়েছিলো। কেন? অভিযোগ, কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। সময়মতো স্টেশনে প্রবেশের সংকেত দিতে না পারায় এ দশা। মাত্র ৭ মিনিট হলেও তা যে কর্তব্যে অবহেলারই নজির! কর্তারা অস্বীকার করবেন কীভাবে? এভাবেই তো অনিয়ম দুর্নীতি বাসা বাঁধে। বেধেছে।