খোশ আমদেদ মাহে রমজান

 

প্রফেসর . মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: মাগফেরাতের দশকের আজ শেষ দিন। কাল থেকে শুরু হবে রমজানের শেষ ভাগ, অর্থাৎ নাজাতের দশক। আজ সূর্যাস্তের সাথে সাথে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ নিজ নিজ মসজিদে এতেকাফ শুরু করবেন। হাদিসের বর্ণনা মতে শেষ দশকেই রয়েছে সেই মহিমান্বিত রজনী শবে কদর যা হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। আর এই শবেকদরের তালাশেই হুজুরে আকরাম (সাঃ) রমজানের শেষ দশ দিন মসজিদে নিয়মিত এতেকাফ করতেন। হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নবী করীম (সাঃ) হায়াতের শেষ পর্যন্ত নিয়মিত শেষ দশকে এতেকাফ করেছেন এবং তার ওফাতের পর তার পবিত্র স্ত্রীগণও এতেকাফ করেছেন (বুখারি, মুসলিম)। এতেকাফ অর্থ কোনো স্থানে নিজেকে আবদ্ধ রাখা। শরিয়তের পরিভাষায়, এক বিশেষ সময়ে এক বিশেষ নিয়মে নিজেকে মসজিদে আবদ্ধ রাখাকে এতেকাফ বলা হয়। হাদিসে এতেকাফের বহুত ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসুলে করীম (সাঃ) এরশাদ করেন, এতেকাফকারী যাবতীয় গুনাহ হতে মুক্ত থাকে এবং তার জন্য নেকিসমূহ লেখা হয় ওই ব্যক্তির ন্যায় যে (বাইরে থেকে) যাবতীয় নেক আমল করে (মেশকাত, ইবনে মাজাহ)। অপর এক দীর্ঘ হাদিসের অংশ বিশেষে এরশাদ হয়েছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একদিন এতেকাফ করবে আল্লাহপাক তার এবং জাহান্নামের মধ্যে তিন খন্দক দূরত্ব সৃষ্টি করে দেবেন। যার এক খন্দকের দূরত্ব আসমান ও জমিনের দূরুত্বের চেয়েও বেশি (তাবারানি, বায়হাকি, হাকিম, তারগিব)। রমজানের শেষ দশকে এতেকাফ করা সুন্নতে মোয়াক্কাদাহ, অর্থাৎ মহল্লার পক্ষ থেকে যদি কেউ এতেকাফ করে তাহলে ওই মহল্লার সবার জিম্মাদারি আদায় হয়ে যাবে। আর যদি কোনো মহল্লার কেউই এতেকাফ না করেন তাহলে সবাই গুনাহগার হবে। আমরা দুনিয়াবী নানা ঝামেলার কারণে মন-প্রাণ দিয়ে আল্লাহকে ডাকতে পারি না। এতেকাফ আমাদের জন্য বছরে একবার এই সুযোগ করে দেয় যে দুনিয়ার মায়ামহ ত্যাগ করে একান্তভাবে মাওলাকে ডাকা যায়। তবে এতেকাফকারীর উচিত শুধু নিজের জন্য দোয়া না করে সমগ্র উম্মতের জন্য দোয়া ও এস্তেগফার করা। (লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)।