কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেলে উৎপাদনে উৎসাহপায়

 

ফসলওঠার মরসুমে কৃষক যখন তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে যান তখন তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। সে ধানই হোক আর ভুট্টা বা গমই হোক। কৃষকের পরিশ্রমের পণ্যে রক্তচোষার মতো ভাগবসায় মধ্যস্বত্বভোগীরা। সরকারিভাবে কৃষিপণ্য সংগ্রহ অভিযানের মাঝে কালক্রমে মধ্যস্বত্বভোগীর সারিতে দাঁড়িয়েছে সরকার দলীয় কিছু নেতাকর্মী।

ধানবীজ সরবরাহের জন্য তালিকাভুক্ত কৃষক হলেও তার মাথার ওপর কাঁঠাল ভেঙে খায় ওই মধ্যস্বত্বভোগী। সাধারণ গম, ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রেও অভিন্ন চিত্র। শুধু কি তাই- বেসরকারিভাবে গড়ে ওঠা কিছু প্রতিষ্ঠানে বড় বড় ব্যবসায়ী তথা সরবরাহকারী সংশ্লিষ্ট কোনো কোনো কর্তাকে খুশি করে ক্ষুদ্র কৃষকদের জিম্মি করে রাখেন। যেমনটি ভুট্টার ক্ষেত্রে চুয়াডাঙ্গার সিপির কিছু ক্রয়কেন্দ্র ও সরবরাহকারীদের আচরণেই স্পষ্ট। মিলগেটে কৃষক ও সরবরাহকারীর ভুট্টার দাম একই হলেও অজুহাতের ক্ষেত্র বিশেষ ভিন্ন। বলিরপাঠা মূলত প্রান্তিক চাষিই।

সরকারের খাদ্যসংগ্রহঅভিযানের মূললক্ষ্য হচ্ছে, দেশের কৃষক সমাজের উৎপাদিত পণ্যেরন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, যাতে কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেয়ে উৎসাহপায়, অনুপ্রাণিত হয়, তার অর্থনৈতিক সচ্ছলতা আসে, জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে।কিন্তু দালাল, মধ্যস্বত্বভোগী ফঁড়িয়ারা এ সদিচ্ছার সামনে প্রধান প্রতিবন্ধকহয়ে দাঁড়ায়। সেই প্রতিবন্ধকদের কাতারে শাসকদলের নেতাকর্মীরা অন্তর্ভুক্তহয়ে পড়ার অর্থ, সরকারের জনমুখি জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডেরই বিরোধিতা করা।যারা এ কাজে নিয়োজিত হয়েছেন এমপির দলের নাম ভাঙিয়েই হোক তাদের অবিলম্বেআইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা প্রয়োজন। একই সাথে সরকারি কর্মকর্তা, যারা এ অভিযান বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত তাদেরও স্মরণ করিয়ে দেয়াপ্রয়োজন, কোনো ব্যক্তির নির্দেশে কার্যক্রম বন্ধ করার পক্ষেকোনো যুক্তিই গ্রহণযোগ্য নয়। দায়িত্ব পালনে তাদের ভীরুতা, শৈথিল্যওঅগ্রহণযোগ্য।

কৃষক যাতে তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পানতার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। দুর্বৃত্তরা যেন কোনোক্রমেই সরকারি দল কিংবামন্ত্রী-এমপির নাম ভাঙিয়ে সরকারিকর্মকাণ্ডের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে, তার ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে কৃষি প্রধান দেশে কৃষকদের সুবিধাটাই অগ্রাধিকার দিতে হবে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।