ইউপি নির্বাচন : সংঘাত-সহিংসতা বেড়েই চলেছে

 

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। প্রথম দফায় ঘোষিত তফসিলভুক্ত কুষ্টিয়া মিরপুরসহ দেশের ৭৩২টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আজ মঙ্গলবার ভোটগ্রহণ। প্রথম দফায় ঘোষিত তফসিলে চুয়াডাঙ্গার কোনো ইউনিয়নকে রাখা না হলেও দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত তফসিলভুক্ত করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদরের ৪টি ইউপিকে। এ ৪টিসহ দ্বিতীয় দফায় ঘোষিত তফসিলভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ আগামী ৩১ মার্চ।

প্রথম দফায় ঘোষিত তফসিলভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে নির্বাচনী প্রচারের শেষ সময়ে এসেও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংঘাত-সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এরই মাঝে আজ ভোটগ্রহণ। প্রথম দফাভুক্ত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিরপেক্ষ সুষ্ঠু অবাধ না হলে বাকিগুলো কেমন হবে তা বুঝতে বাকি থাকবে না। অবশ্যই বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার স্বার্থে এবং পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সাধারণ নির্বাচনে সকল দলকে আনতে ইউপি নির্বাচনে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু পরিবেশ গড়ে তোলা দরকার। যদিও আপাত দৃষ্টিতে তা অলিক আশা।

দলীয় মনোনয়নে নির্বাচন হওয়ায় বড় দলগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের কোন্দল সামনে চলে এসেছে। দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলেই রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। এ ছাড়া স্থানীয় প্রভাবশালীদের তত্পরতা তো রয়েছেই। ক্ষমতাসীন জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যেও সংঘাত সংঘর্ষ লেগেই আছে। বিশেষ করে কুষ্টিয়ার মিরপুরের কয়েকটি ইউনিয়নে তো ক্ষমতাসীন জোটভুক্ত জাসদ আর আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত লেগেই ছিলো।

বাংলাদেশে সব নির্বাচন যেমন উৎসবমুখর পরিবেশে হয়ে থাকে, তেমনি সব নির্বাচনেই থাকে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ও সংঘাতপ্রবণ এলাকা। নির্বাচন কমিশনের কাছেও এসব কেন্দ্র ও এলাকার তালিকা থাকে। কমিশন পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রথম ধাপের নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত-সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। শুরুতে এসব স্থানে নির্বাচন কমিশনের তত্পরতা খুব একটা চোখে পড়েনি। ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের তত্পরতার ব্যাপারেও চোখ ঘুরিয়ে রেখেছিলো নির্বাচন কমিশন। শেষের দিকে এসে কিছু ব্যবস্থা নিলেও ততোদিনে যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।

নির্বাচনের সময় স্থানীয় প্রশাসন কমিশনের অধীনে পরিচালিত হয়। সুতরাং প্রশাসনকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী সংঘর্ষ প্রবণ কেন্দ্র ও এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তত্পরতা বাড়াতে ক্ষমতার হস্তক্ষেপ সংস্কৃতি পরিহারে কর্তাদের কঠোর হতে হবে। কেউ যাতে পেশিশক্তি বা অস্ত্রের ব্যবহার করতে না পারে, সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা জরুরি। এসব নিশ্চিত করতে হলে প্রশাসনকে অবশ্যই ক্ষমতার প্রভাবমুক্ত হতে হবে।