অথচ কারো কারো কারণে তাতে পড়ছে কলঙ্কের দাগ

 

যে টাকা কৌশলে ডাকাতি করা হচ্ছিলো, সেই টাকা হাসপাতালের বিছানার বালিশের নিচ থেকে চুরি হয়ে গেছে। টাকা চুরির পরই প্রকাশ পায়, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে কীভাবে ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করা হয়।

 

হাসপাতালে নিখরচায় অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা, অথচ অজুহাত খাড়া করে কয়েক সপ্তা পর অস্ত্রোপচার করা হবে বলে জানালে যন্ত্রণায় কাতর রোগীর পাশে ক্লিনিকের দালাল জুটে যায়। টাকা দিলে ক্লিনিকে দু একদিনের মধ্যেই অপারেশন করে যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা হবে বলে জানায় দালাল। দালালের কথায় দরিদ্র রোগীর কন্যা টাকা জোগাড়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ট্রাকচালক স্বামীকে দিয়ে ট্রাকমালিকের নিকট থেকে ১০ হাজার টাকা কর্য করান। সেই টাকা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর বিছানার বালিশের নিচে রাখেন। সুযোগ বুঝে চোর তা চুরি করে নেয়। টাকা চুরি হওয়ার পর মা মেয়ের বুকফাটা আহাজারি কিছু ব্যক্তির বিবেককে নাড়া দিয়েছে বটে। চিকিৎসা সেবার নামে যারা টাকা হাতিয়ে নেয়ার ফাঁদ পেতেছিলো তাদের বিবেক জেগে ওঠার মতো কি খটকা লেগেছে? অর্থলিপ্সতায় অন্ধ হলে ওই কান্না দালালসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টিগোচর হবে কীভাবে?

 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দিনে ও রাতে নেশাখোর চোর ঘুর ঘুর করে। মাঝে মাঝে নারী চোরেরও আনাগোনা বাড়ে। এরা সুযোগ পেলেই চুরি করে রোগীর টাকা, ওষুধ পথ্যসহ মূল্যবান মালামাল। চিকিৎসার জন্য গচ্ছিত অর্থ চুরি হলে চিকিৎসা পড়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে। আর সেই টাকা যদি হয় ধার-কর্য করা তা হলে তো কষ্টের আর শেষ থাকে না। হাসপাতালে চোরের উৎপাত বন্ধে পুলিশি পদক্ষেপ প্রয়োজন। মাঝে মাঝে না, লাগাতার অভিযান অব্যাহত রেখে হাসপাতালের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। চোরের উৎপাত বন্ধের পাশাপাশি যারা অজুহাত খাড়া করে অসহায় রোগীকে ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করেন তাদেরও অর্থলিপ্স মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন। সেবার ব্রত নিয়ে মহান পেশায় নিয়োজিত সকলে আন্তরিক হলে হাসপাতাল দালালমুক্ত হতে বাধ্য। সেবার ব্রত নিয়ে সেই দায়িত্ব কেউ কেউ নিষ্ঠার সাথে পালন করছেনও, অথচ কারো কারো কারণে তাতে পড়ছে কলঙ্কের দাগ।

 

ঘোরপ্যাচ নয়, নয় কোনো অজুহাত। মহৎ পেশার মানুষগুলো হোক মহৎ, মহান। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে সমাজের দরিদ্র্য মানুষগুলোর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে ফুটে উঠুক মহত্ব।