২১ হাজার মেট্রিক টন পচা গম নিয়ে ফিরে গেলো এমভি পিনটেল

স্টাফ রিপোর্টার: মংলা সমুদ্রবন্দরে চার মাস অপেক্ষার পরও ২১ হাজার মেট্রিক টন পচা গম খালাস করতে না পেরে সাইপ্রাসের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি পিনটেল ফিরে গেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় মংলা বন্দর থেকে জাহাজটি সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে।
স্থানীয় শিপিং এজেন্ট লিটমন্ড শিপিং জানায়, প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে এমভি পিনটেল গত বছরের ১২ অক্টোবর মংলা বন্দরে আসে। আমদানি করা এ গম পচা ও পোকাযুক্ত এবং খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় তা খালাসের কাজ বন্ধ করে দেয় খাদ্য অধিদফদতর। গম খালাসের জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ইমপেক্টর কনসালটেন্ট খাদ্য অধিদফতরের সাথে কয়েক মাস ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেও বিফল হয়। অধিদফতর শেষ পর্যন্ত গম গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত জানায়। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে জাহাজটি পচা গম নিয়েই ফ্রান্সের রোয়েন ডাকিং বন্দরের উদ্দেশে গতকাল শুক্রবার সকালে মংলা বন্দর ছেড়ে যায়।
জানা গেছে, গত বছরের ১ এপ্রিল ফ্রান্স থেকে গম বোঝাই করে পিনটেল চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। এরপর জাহাজটি প্রায় ৫২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে গত বছরের এপ্রিলের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে। চট্টগ্রামে প্রায় ৩১ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন গম খালাস করে বাকি ২১ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে মংলা বন্দরে আসার পর নিম্মমানের গম হওয়ায় তা খালাস কাজ বন্ধ করে দেয় খাদ্য অধিদফতর।
মংলার খাদ্য পরিদর্শক এসএম আনোয়ার জাহিদ জানান, গম আমদানির জন্য ঠিকাদারী ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি হয়েছিলো গত ২৪ মার্চ। আর ফ্রান্স থেকে এ গম জাহাজ বোঝাই করা হয়েছিলো এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে। তিনি জানান, আমদানিকৃত এ গম নিয়ে জাহাজটি বন্দর চ্যানেলের হারবারিয়ায় নোঙর করার পর গম খালাসের জন্য একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ করা হয়। ১৩ অক্টোবর আমদানি গম খালাস তদারকি কমিটি জাহাজের গম পরিদর্শন করে তা খালাস না করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে খাদ্য বিভাগসহ উচ্চমহলের নির্দেশে নমুনা গম পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। এ গম নিম্নমান ও খাওয়ার অনুপযোগী হওয়ায় তা খালাস না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে খাদ্য অধিদফতর।
আনোয়ার জাহিদ জানান, বিষয়টি গম আমদানিকারক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কমপ্লেক্স কনসালট্যান্ট লিমিটেডকে জানালেও রহস্যজনক কারণে জাহাজটি মাসের পর মাস এ বন্দরে অবস্থান করতে থাকে। তিনি বলেন, এ বন্দরে আসার পর গমের গুণগতমান খারাপ হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ায় গম গ্রহণ করা হয়নি। অপর দিকে চট্টগাম বন্দরে খালাস হওয়া ৩১ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন গম কোথায় এবং কিভাবে আছে তা জানাতে পারেননি তিনি।