২০১৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ২০১৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের আশা করছে। এর ফলে বাংলাদেশে যোগাযোগ এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা হবে। সেইসাথে নতুন নতুন ব্যবসার দ্বারও উন্মুক্ত হবে। এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ এবং ভারত পারমাণবিক ক্ষেত্র ও মহাকাশ প্রযুক্তিতে পরস্পরকে সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়।

গতকাল বুধবার জানা যায়, গত সপ্তায় ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সত্যিই বহুমুখি সম্পর্কে রূপ নিয়েছে। এটা স্বীকৃত যে উচ্চ পর্যায়ের এমন বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো জোরদার করে তুলবে। জানা যায়, বিগত ছয় বছরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রায় ৫১টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। দু দেশই এসব চুক্তি সম্পাদনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, ‘ভারতের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহ মহাকাশ গবেষণা প্রযুক্তিতে সার্কভুক্ত দেশগুলোকে সহায়তা করা হবে। এজন্য তিনি ইসরোকে সকল সার্কভুক্ত দেশের উন্নয়নের স্বার্থে একটি বিশেষ স্যাটেলাইট বানানোর তাগিদ দিয়েছেন।

এদিকে সম্প্রতি এশিয়ার মহাকাশ গবেষণা বেশ গতি লাভ করেছে। অনুন্নত দেশগুলোও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। বাংলাদেশ এগুলোর মধ্যে একটি। বাংলাদেশের এই আগ্রহের কথা জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র বিষয়ক যুগ্মসচিব শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথ বলেন, ‘প্রযুক্তিক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে আমাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদেরকে এই প্রস্তাব দিয়েছি যেন তারা এ ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেন। আশা করছি তারা সাড়া দেবেন। অদূর ভবিষ্যতে ভারত এবং নেপাল ভারতের মতো উন্নত দেশের স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভরশীল হবে। এজন্যই তাদের মহাকাশ প্রযুক্তিতে লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।’

ভারত, চীন, জাপান, ইরান এবং দক্ষিণ কোরিয়া স্বাধীন এবং সফলভাবে নিজেদের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। বাংলাদেশও এই দলে সামিল হতে আগ্রহী। সম্প্রতি এ প্রকল্পটি এগিয়ে নেয়ার জন্য বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে স্যাটেলাইটটি নির্মাণ এবং দুটি স্থল স্টেশন করার প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১২ সালে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলারিটি কমিশন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ কেন্দ্রের (এসপিআই) সাথে সাড়ে ৮২ কোটি টাকার একটি যৌথ পরামর্শ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। নির্মিতব্য স্যাটেলাইটির নাম বঙ্গবন্ধু-১। এক সময় বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট হবে। বাংলাদেশের আইটি বিশেষজ্ঞরা ক্যাবল নেটওয়ার্কে বিদেশি চ্যানেলগুলোর আগ্রাসন ঠেকাতে এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ সেবা উন্নত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আবহাওয়া তত্ত্ব বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সংকেত পাওয়াও ওই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সহজ হবে। সেইসাথে প্রাকৃতিক সম্পদের অবস্থান চিহ্নিত করতেও এটি সহায়তা করবে।

প্রশ্ন উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এসপিআই’র কর্মপদ্ধতি বাংলাদেশের জন্য নিরাপদ হবে কিনা? জানা গেছে, এ কারণে প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় প্রকল্পটি চূড়ান্ত হওয়ার আগে তৎপর হয়েছেন। তিনি সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার আগে পরামর্শ সংস্থাগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা বিটিআরসি’র কাছ থেকে চেয়েছেন। অন্যান্য সংস্থাগুলো হলো- সাউদার্ন এরোস্পেস এবং টেলিকম কনসালটিং, পিটি টেলিকমুনিকেসি, ইন্দোনেশিয়া ইন্টারন্যাশনাল, গ্লোবকম এবং টেলিস্পেস সিস্টেম অ্যান্ড টেলিকাস্ট।