১ লাখ টাকায় ৭২ লাখ টাকা দেয়ার কথা বলে আলমডাঙ্গায় অভিনব কায়দায় বন্ধুত্বের ছলনায় নাটক সাজিয়ে প্রতারণার অভিযোগ

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বন্ধুত্বের ছদ্মাবরণে অবিশ্বাস্য প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে আলমডাঙ্গার পারকুলা গ্রামে। ১ লাখ টাকার বিনিময়ে ৭২ লাখ টাকা দেয়ার অভিনব কৌশলে নাটক সাজিয়ে ২ যুবক হাতিয়ে নিয়েছে অপর এক যুবকের ১ লাখ টাকা। এ প্রতারণার কাহিনীর প্রমাণ পেয়ে প্রতারিত বন্ধু   হাড়ি-পাতিল ফেরিওয়ালা জামায়াত আলী স্ট্রোক করে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার পারকুলা গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে সরলসোজা যুবক জামাত আলী গ্রামে গ্রামে হাড়ি-পাতিল বিক্রি করে বেড়ান। তার দু বন্ধু মুক্তার আলীর ছেলে রকিবুল ইসলাম ও শওকত আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম। জামাত আলী জানান, তারা দুজন কয়েকদিন আগে জামাত আলীকে গোপনে ডেকে নিয়ে জানায়, কুষ্টিয়া শহরের এক হিন্দু ভদ্রলোক সৌদিআরবে চাকরি করতো। সম্প্রতি তিনি সেখানে মারা যান। লাশ দেশে পাঠানো হয়। তার লাশ পাঠানোর কফিনে একটি বড় বালিশ পাঠানো হয়। বালিশটি লাশ দাহকারী কুষ্টিয়ার এক হরিজন সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে দান করা হয়। তিনি বাড়ি নিয়ে গিয়ে খুলে দেখতে পান যে ভেতরে শুধু সৌদি ৫০ রিয়ালের নোট ভর্তি। তিনি এক ফেরিওয়ালার নিকট থেকে একটা ছোট জিনিস কিনে একটি ৫০ রিয়ালের নোট দিলে খুশিতে ডগমগ ফেরিওয়ালা ঘটনাটি রকিবুল ও রবিউলকে জানায় বলে তারা জামাতকে সে কাহিনী শোনায়। তারা এও জানায়, কুষ্টিয়ার সেই ভাগ্যবান চন্ডালের সাথে তাদের কথা হয়েছে। মাত্র ১ লাখ টাকা দিলেই তিনি ৭২ লাখ টাকার সৌদি রিয়ালগুলো দিয়ে দেবেন বলে কথা দিয়েছেন। এ লোভনীয় গল্পটুকু শুনিয়ে তারা গল্পের সত্যতা প্রমাণের জন্য তারা জামাতকে কুষ্টিয়া নিয়ে গিয়ে অজ্ঞাত সেই ভাগ্যবান চন্ডালের সাথে কথাও বলিয়ে দেয়। পরে ২ বন্ধুর প্ররোচনায় জামাত তার চাচাতো ভাই, খালু শ্বশুরসহ বিভিন্ন আত্মীয়ের নিকট থেকে ১ লাখ টাকা ধার করে তাদের হাতে তুলে দেন। গত শুক্রবার সকালে তারা একসাথে কুষ্টিয়া যান। চৌড়হাসে জামাত আলীকে একা বসিয়ে রেখে রকিবুল ও রবিউল শহরের ভেতর কথিত রিয়াল কিনতে যান। কিছু সময় পরে একটি চটের ব্যাগ হাতে ফিরে আসেন। জামাতকে বলে-ব্যাগ ভর্তি রিয়াল। পথে খুলতে মানা। একটা আমাদের পকেটে রয়েছে। এটা দেখ। রিয়াল দেখে জামাতের আসলই মনে হয়। তারা একটা নসিমন নিয়ে দ্রুত বাড়ি ফেরেন। বাড়িতে ফিরে রিয়ালের ব্যাগ নিয়ে উঠেন রকিবুলের ঘরে। ব্যাগ খুলে দেখে রকিবুল ও রবিউল হাসাহাসি করলেও বাজ পড়ে জামাতের মাথায়। সেখানেই জামাত আলী অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে ডাকা হয় গ্রাম্যডাক্তার লিয়াকত আলীকে। জামাত এখন আক্ষেপ করে বলছেন, রবিউল ও রকিবুল দুজনই তার বন্ধু হয়ে এতোবড় প্রতারণা করতে পারলো? এখন সে কীভাবে ধারের ১ লাখ টাকা পরিশোধ করবে?