১৫ লাখ টাকার চুক্তিতে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ৮ জন?

 

কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ-৪ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করে দিয়েছে পুলিশ। ১৫ লাখ টাকার চুক্তিতে তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ৮ দুর্বৃত্ত। পুলিশ এরকমই তথ্য পেয়ে তাদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করেছে।

মামলার এজাহারসূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এমপি আনার নির্বাচন পরবর্তী ঘরোয়া সভা করতে  রায়গ্রাম ইউনিয়নে যান। সভা শেষে নেতাকর্মীদের সাথে রাতেই তার ফেরার কথা ছিলো। কিন্তু জরুরি আরও একটি কর্মসূচি থাকায় তিনি রাতে সেখানে থেকে যান। সাথে থাকা এমপি আনারের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফসহ ৫ জন তিনটা মোটরসাইকেলে কালীগঞ্জের দিকে ফিরছিলেন। এজাহারে বিবরণে আরও বলা হয়েছে, মোটরসাইকেলে এমপি আনার আছেন এমন তথ্য পেয়ে খামারমুন্দিয়া গাজেম আলী দাখিল মাদরাসার সামনে ওঁত পেতে থাকে ৮ দুর্বৃত্ত। এমপি আনারের লোকজন সেখানে পৌঁছামাত্রই গুলি চালায় কওসার আলী। গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে এমপি আনারের পিএস আব্দুর রউফের মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। এ সময় তারা মোটরসাইকেল থামালে আবু সাঈদ তাদের লক্ষ্য করে দুইটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায়। এমপি আনারের লোকজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে আবু সাঈদ লোকজনের হাতে ধরা পড়ে যায়। পরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে এমপি আনারকে হত্যার ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করে। আবু সাঈদ জানায়, তারা ৮ জন এমপি আনারকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হত্যা করার জন্য সেখানে অবস্থান করছিলো। মোটরসাইকেলের আলো দেখে মামলার বাদী আব্দুর রউফের সাথে এমপি আনার আছেন মনে করে কওসার আলী বন্দুক দিয়ে এমপি আনারকে গুলি করে। সাঈদ আরও জানান, কিলিং মিশনে অংশ নেয়া ৮ জনকে ১৫ লাখ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়েছে সে। আব্দুর রউফ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামায় কালীগঞ্জ উপজেলার ফরাসপুর গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবু সাঈদ (৪৬), ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাধানগর ঘোপপাড়ার মৃত কুড়ল মণ্ডলের ছেলে ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কর্মচারী কওসার আলী (৪৫), আজিজ, মিলন, মাসুমসহ অজ্ঞাত ৩ জনসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর ওইদিন দুপুরেই কওসার আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই ইমরান আলম জানান, ১৫ লাখ টাকার চুক্তিতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এমপি আনারকে হত্যা মিশনে অংশ নেয় ৮ দুর্বৃত্ত। কিন্তু ঘটনার দিন নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী না ফেরায় এমপি আনার বেঁচে যান। ঘটনাস্থল থেকে আবু সাঈদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমপির পিএসসহ অন্যদের ওপর গুলি ও বোমা হামলার আলামত জব্দ করা হয়েছে। ইমরান আলম আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের ৫ দিনের রিমান্ডের জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারের জোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এ ব্যাপারে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার বলেন, আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই গুলি ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। প্রায় ৬-৭ মাস ধরে তারা আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলো। এরাতো এতো টাকার মালিক না। তাহলে এতো টাকা কোথায় পেলো? কারা এসব টাকার জোগান দিচ্ছেন? বিষয়টি পুলিশকে খতিয়ে দেখতে হবে।