১০ বছরের পুরোনো কমিটি নিয়ে চলছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ!

 

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে। তারপর কয়েকবার কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটি হলেও বদল হয়নি কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি। কালীগঞ্জে ছাত্রলীগের রাজনীতি এখন অছাত্র, ব্যবসায়ী আর বিবাহিতদের হাতে জিম্মি। সময়মতো কাউন্সিল না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন সৎ, যোগ্য ও ত্যাগী নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দলীয় কর্মসূচিতে নেই উপজেলা কমিটির শীর্ষ নেতাদের অংশগ্রহণ। আর এসব কিছু নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এ ছাত্র সংগঠনের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এক দশকেরও বেশি সময়ের এ কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। সংগঠনের কর্মীদের মূল্যায়ন না করা, উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌর ও ১১টি কলেজ কমিটি না করা, দলের স্থায়ী কার্যালয় না হওয়াসহ বিবিধ কারণে ক্ষোভ, বিরোধিতা এখন চরম পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।

ছাত্রলীগের ত্যাগী ও নবীণ নেতাকর্মীরা কোনো পদ-পদবিতে আসতে পারছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম। দলটির বিভিন্ন দিবস পালনে তেমন কোনো জোরালো কার্যক্রম লক্ষ্যনীয় নয়। নামমাত্র কার্যক্রম চলছে পৃথকভাবে। স্থবির ছাত্রলীগকে বিভক্তিমুক্ত ও নতুন মেধাবী নেতৃত্বের জন্য কেন্দ্রীয় এবং জেলা ছাত্রলীগের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা।

দলীয় সূত্র জানায়, বর্তমান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সোহেল ১০ বছর আগেই শিক্ষাজীবন শেষ করে। চার বছর আগে তিনি বিয়ে করেছেন। বর্তমানে এক সন্তানের জনক, তার পেশা ব্যবসা। সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন পলাশ এক সন্তানের জনক। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও ৫১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সহসভাপতি, সহসম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের অধিকাংশই বিবাহিত। তাদের কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা সরকারি চাকরিরত। অনেকে আবার এলাকায় থাকেন না।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন পলাশ নিজেকে ছাত্রনেতা বলতে এখন লজ্জা পান। তিনি বলেন, আর কতো বছর ছাত্রলীগ করবো?আর ছাত্রলীগ করতে চাই না নতুনদের জায়গা করে দিতে চাই। তিনি বলেন, দীর্ঘ সময়ে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি না হওয়ায় দলের মধ্যে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছে না। এতে করে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ভেঙে পড়ছে।

ছাত্রনেতা ইসরাইল হোসেন বলেন, ৩ বছর মেয়াদী কমিটি দিয়ে চলছে ১০ বছর ধরে। তিনি দলের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, তাদের গাছাড়া ভাবের কারণে উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ এ মুহূর্তেই নতুন কমিটি করা।ছাত্রনেতা সুমন হোসেন বলেন, আমরা কয়েকজন মিলে ছাত্রলীগের রাজনীতিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। দলের কমিটি রয়েছে, কিন্তু নেতা নেই। এভাবে চলতে পারে না। ছাত্রলীগের নতুন কমিটি না হাওয়ায় দীর্ঘদিন নেতৃত্বের সংকট রয়েছে। কর্মী তৈরি হচ্ছে, কিন্তু নেতা তৈরি হচ্ছে না।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম অবিলম্বে সম্মেলন করার তাগিদ দিয়ে বলেন-আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যেই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন উপজেলা কমিটি গঠিত হবে।