হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুরের নিখোঁজ গৃহবধূ ৪ বছরেও ফেরেনি

ডাকবাংলা প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের মনোয়ারা খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূ ৪ বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। কোথায় আছেন, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে মনোয়ারা খাতুনের স্বামীসহ ওই পরিবারটির কাছে কোনো তথ্য নেই। এ নিয়ে হরিণাকুণ্ডু থানায় একটি জিডি করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। নিখোঁজ গৃহবধূ হরিণাকুণ্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের কুটি মণ্ডলের মেয়ে ও আকরাম হোসেন মন্টু মিয়ার স্ত্রী।
গৃহবধূর স্বামী জানান, ২০১২ সালের ৭ মার্চ থেকে মনোয়ারাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, একই গ্রামের মৃত ইমান আলী সরদারের ছেলে আব্দুস সাত্তারের কাছে ৪৬ শতক জমি এক লাখ টাকায় বন্ধক রাখেন তার স্ত্রী। এ ঘটনার পর থেকেই মনোয়ারা খাতুন নিখোঁজ। তার ধারণা বন্ধকি জমি হাতিয়ে নিতেই মনোয়ারাকে হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে। আকরাম হোসেন জানান, হরিণাকুণ্ডু থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের জমির বন্ধক গ্রহিতা আব্দুস সাত্তারকে সে সময় ৫ দিনের মধ্যে মনোয়ারাকে হাজির করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ আর বেশিদূর এগোয়নি। তদন্ত থেমে গেছে। জমির বন্ধক গ্রহীতা আব্দুস ছাত্তার টাকা দিয়ে পুলিশকে থামিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন মন্টু। তিনি বলেন, কাজের জন্য তিনি সব সময় বাইরে থাকেন। এই সুযোগে তার স্ত্রীকে গুম করে প্রতিবেশী সাত্তার তার শাশুড়ির ৪৬ শতক জমি বন্ধক রাখার কথা প্রচার করেন। আব্দুস সাত্তার দেড়শ টাকার স্ট্যাম্পে একটি বন্ধকী চুক্তিনামাও দেখাচ্ছেন, যাতে কোনো সাক্ষি নেই। ভুয়া বন্ধকনামার মাধ্যমে জমি দখলের জন্য আমার স্ত্রীকে গুম করা হয়েছে বলেও মন্টু অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সালিস বৈঠক হওয়ার পর সাত্তার মন্টুর শাশুড়ি ও তাকেও হুমকি দিয়েছিলেন। মন্টু অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর ২০১২ সালের ২৭ জুন শৈলকুপার কেসমত মাইলমারী গ্রামের ওহিমুদ্দির বাড়ির সেফটি ট্যাংকে অজ্ঞাত এক গৃহবধূর লাশ পাওয়া যায়। লাশটি দেখতে তার স্ত্রীর মতো মনে হলেও পচেগলে যাওয়ার কারণে ঠিকমতো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই গৃহবধূর পরিচয় ও ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হলে মনোয়ারা গুমের রহস্য পাওয়া যেতো বলে তিনি মনে করেন। তিনি বিষয়টি তদন্তের জন্য সিআইডির হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ ব্যাপারে হরিণাকুন্ডুর দখলপুর গ্রামের আব্দুস সাত্তার জানান, মন্টুর মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা নেয়ার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। এই গুম হওয়ার সাথে তিনি মোটেও জড়িত নন। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহাতাব উদ্দীন জানান, আমি নতুন এসেছি। আর বিষয়টি ৪ বছর পার হয়ে গেছে। নতুন করে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখা যেতে পারে।