হরিণাকুণ্ডুতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সেশন ফির নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেশনচার্জের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই মর্মে সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেছে ঘোড়াগাছা গ্রামের কয়েকজন অভিভাবক।
তারা জানান, প্রধান শিক্ষক সকল সময় শিক্ষার্থীদের সাথে বাজে আচরণ করে থাকেন। প্রতি বছর এসএসসি পরীক্ষার্থী ও দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে থাকেন। ঘোড়াগাছার আশপাশে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকার কারণে তার নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই বছরে এসএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে পরীক্ষার ফি বাবদ ৩০০ টাকা ও ২০১৮ সালের সেশন ফি বাবদ অতিরিক্ত ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও তাদের অভিযোগ, আমারা তো বছরেই শুরুতেই সেশন ফি দিয়েছি আমার কেন দেবো? সে ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক তাদের এই বলে চাপ প্রয়োগ করছে যে সেশন ফি না দিলে তাদের এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেয়া হবে না। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণ সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করার কারণে প্রধান শিক্ষক ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের পরীক্ষায় দেখে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়।
অর্থ আদায়ের কয়েকটি রশিদে দেখা যায় টাকা কোন তারিখে নিয়েছে কি বাবদ নিয়েছে তা উল্লেখ নেই। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, প্রতি বছর প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে ক্রীড়া ফি বাবদ ৬০০ টাকা ও স্কাউট ফি ৭০০ টাকা বোর্ডকে দিতে হয়। তাছাড়া অন্য কোনো পরীক্ষার জন্য সরকারি কোনো ফি নির্ধারণ নেই। তবে বোর্ড প্রশ্ন করলে শিক্ষার্থী প্রতি ১০ টাকা করে জমা দিতে হয়। তাছাড়া যখন স্কুল এমপিও ভুক্ত ছিলো না তখন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বেতন নিতো। এখন শিক্ষকদের শতভাগ বেতন ভাতা সরকার বহন করে ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা প্রদান করে থাকে। এ প্রসঙ্গে ঘোড়াগাছা লাল মোহাম্মাদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাসেম বলেন, আমার টাকা নেয়ার নিয়ম আছে। আমি টাকা নিয়েছি তা আপনাদের সমস্যা কোথায়? আমার শিক্ষা আফিস আছে, আমার ওপরের কর্মকর্তা আছে, আমার ম্যানিজিং কমিটি আছে, আমি তাদের কাছে জবাবদিহীতা করবো। এইটা গ্রামের স্কুল এই স্কুলটা তো বাতাসে চলে না। আপনাদের ভাই-বোন স্কুলে পড়ে আপনারা অবশ্যই জানেন লেখাপড়া করতে কতো টাকা লাগে। এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতিকে জানেন? জানলে আপনার আর সাংবাদিকতা করা লাগবে না। এই সময়ে সভাপতি নাম জিজ্ঞাসা করলে আর তিনি সভাপতির নাম বলেন না।
এ বিষয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফারুক আহাম্মেদ বলেন, স্কুলে কোনো পরীক্ষা বাবদ টাকা নেয়ার নিয়ম নেই। তাছাড়া ২০১৮ সালের সেশন ফি ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে কেন নেবে? যদি কোনো স্কুল নিয়ে থাকে তাহলে কেউ অভিযোগ দিলে সেই স্কুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।