স্থানীয় মুসলমানরা ভেঙেছে ক্রুস ও সাইন বোর্ড : পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

মেহেরপুর লিভিং চার্চ অব যিশু কুলবাড়িয়া সেন্টারে অনৈতিক কাজের অভিযোগ

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর লিভিং চার্চ অব যিশু কুলবাড়িয়া সেন্টারে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে স্থানীয় কিছু লোকজন ক্রুস ও তাদের সাইন বোর্ড ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। অপরদিকে স্থানীয় মুসলমানা তাদের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে গণস্বাক্ষর করে সাংবাদিকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে অবহিত করেছেন।

জানা যায়, মেহেরপুর সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের কুলবাড়িয়া গ্রামের লাল চাঁদ আলীর ছেলে মোজাফ্ফর আহমেদ ঝন্টুসহ ওই গ্রামের ১০/১২জন মুসলমান গ্লোবাল হারবেস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড রিলিজিওয়াস ট্রাস্ট্র থেকে মোটা অঙ্কের টাকা গ্রহণ করে খ্রিস্টানধর্ম গ্রহণ করেন। তারা ১০/১২টি পরিবার ওই গ্রামের ঠাকুরপাড়ায় লিভিং চার্চ অব যিশু কুলবাড়িয়া সেন্টার নামের সাইন বোর্ড তুলে সেখানে বসবাস করছেন। সম্প্রতি তারা সেখানে মাদক সেবন ও বেচা-কেনাসহ খারাপ মহিলাদের নিয়ে দেহ ব্যবসা করাচ্ছে এমন অভিযোগ তুলেছে গ্রামবাসী। এ ধরনের অপকর্ম হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ওই গ্রামের মুসলমানা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে লাঞ্ছিত করে এবং তার ক্রুস ও সাইন বোর্ড ভাঙচুর  করে। এ ঘটনায় মোজাফ্ফর আহমেদ ঝন্টু বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করেছেন।

এদিকে ওই গ্রামের মুসলমানরা তাদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ করার অভিযোগ তুলে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

মামলার বাদী ঝন্টুর স্ত্রী নাসিমা খাতুন দাবি করেছেন, একই গ্রামের শুকচাঁদ আলীর ছেলে সোহেল রানার নেতৃত্বে ওই রাতে গ্রামের প্রায় শতাধিক লোক নীরিহ ১০/১২টি খ্রিস্টান পরিবারের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারী কতিপয় যুবক তাদের এলাকায় যেয়ে মাদক সেবনসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে চায়। তাদের সে কাজে বাধা দেয়ার অপরাধে আমাদের ওপর হামলা করাসহ ভাঙচুর করা হয়েছে।

মোজাফ্ফর আহমেদ ঝন্টু ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্র“য়ারি ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ওই চার্চের পালক ঝন্টু বিশ্বাস। তিনি বলেন, তার অধীনের ৩ ইউনিয়নের ১৬টি গ্রামের ১ হাজার ১০৬ জন সদস্য রয়েছে। মেহেরপুর পৌর সভার মধ্যে একটি জমি নিয়ে তারই চাচাত ভাই সোহেলের সাথে তার বিরোধ রয়েছে। আইনে সোহেল হেরে যাওয়াসহ গত বৃহস্পতিবার জামায়াত-শিরিবেব সড়ক অবরোধের সময় মেহেরপুর-কাথুলী সড়কে তারা গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে। ওই সময় স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীদের শহরে যেতে দেয়ার চেষ্টা করায় সোহেল রানা তার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং রাতে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।

এদিকে কুলবাড়িয়া গ্রামের শুকচাঁদ আলীর ছেলে সোহেল রানাসহ গণস্বাক্ষরকারীদের দাবি- পালক ঝন্টু বিশ্বাস প্রতিদিন তার চার্চে মাদক কেনা-বেচাসহ মাদক সেবন করে এবং বাইরে থেকে মেয়ে এনে দেহ ব্যবসা করায়। এতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ঘটনার রাতেও এ ধরনের অনৈতিক কাজের অভিযোগে গ্রামবাসী প্রতিরোধ করে। হামলা চালানোর ঘটনাটি সঠিক নয়।

মামলা দায়েরের খরবে ক্ষিপ্ত এলাকার মুসলমানরা গণস্বাক্ষর করে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যারাতে কয়েকটি নসিমনযোগে এলাকার শতাধিক লোক মেহেরপুরে এসে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ দিতে যান। এদিকে গতরাতে মেহেরপুর সদর থানার ডিউটি অফিসার জানান পালক ঝন্টু বিশ্বাস থানায় একটি অভিযোগ দিয়ে গেছে। এখনও তা নথিভুক্ত হয়নি।