সকলের সচেতনতার মাধ্যমে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব– চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র

 স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থার উন্নয়ন কল্পে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে ব্র্যাক ওয়াশ কর্মসূচির আওতায় আয়োজিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কেএম মামুন উজ্জামান। প্রধান অতিথি ছিলেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফাইজার চৌধুরী, প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা, জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম, ব্র্যাক ওয়াশ কর্মসূচির ঝিনাইদহ জেলা ব্যবস্থাপক নাসিমা খাতুন ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম। এছাড়া পৌরসভার সকল কমিশনারবৃন্দ, প্রকৌশলী,  শিক্ষক, ধর্মীয় নেতাসহ  নানা শ্রেণি পেশার মানুষ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দেশের প্রতিটি ঘরে নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০৬ সাল থেকে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক কাজ করে যাচ্ছে। ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ব্র্যাক জেলার দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় কাজ করেছে এবং চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চুয়াডাঙ্গা ও আলমডাঙ্গা পৌর এলাকায় কাজ শুরু করেছে।

নিজস্ব একটি বেইজ লাইন সার্ভে উপস্থাপন করেন ব্র্যাক ওয়াশ কর্মসূচির ঝিনাইদহ জেলা ব্যবস্থাপক নাসিমা খাতুন। ওই সার্ভে রিপোর্টে দেখা যায়, পৌরসভার ৬৬ শতাংশ ল্যাট্রিন স্বাস্থ্যসম্মত। ১২ শতাংশ ল্যাট্রিন ওয়াটার সিল ভাঙ্গার কারণে স্বাস্থ্যসম্মতের আওতায় নেই, যা ৬০ থেকে ৭০ টাকা ব্যয়ে সিল করা সম্ভব। ৫শ ৮৫টি পরিবারের নিজস্ব কোনো ল্যাট্রিন নেই। যারা অন্যের বা পৌরসভার ল্যাট্রিন ব্যবহার করছে। এছাড়া ১শ ৪৮টি ল্যাট্রিনের বর্জ্য নদী, নালা ও খালের পানিতে মিশে যাচ্ছে।

এদিকে, পৌরসভার জরিপে ভিন্ন তথ্য উঠে এসেছে। পৌরসভার তথ্য মতে, পৌর এলাকার মোট বাড়ির সংখ্যা ১৬ হাজার ৪শ ৩টি এবং খানা ৩৭ হাজার ৬শ ৩৫টি। পাবলিক টয়লেট রয়েছে ৭টি ও কমিউনিটি ১৪টি। সেফট্যাঙ্ক বিশিষ্ট টয়লেট রয়েছে ৬৫ শতাংশ, এক পিট বিশিষ্ট টয়লেট রয়েছে ১৫ শতাংশ, দু’পিট বিশিষ্ট টয়লেট ৯ শতাংশ এবং অন্যান্য টয়লেট রয়েছে ১১ শতাংশ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পৌর মেয়র বলেন, স্যানিটেশন একটি এলাকার সার্বিক পরিষ্কার-পরিছন্নতার বিষয়। সকলের সচেতনতার মাধ্যমে স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব। অভিযোগ রয়েছে, অনেকে তাদের ল্যাট্রিনের গভীরতা পানিস্তর পর্যন্ত করে নিচ্ছেন। যার ফলে, ওই ল্যাট্রিনের বর্জ্য সরাসরি পানিস্তরে চলে যাচ্ছে। এছাড়া অনেকের ল্যাট্রিনের বর্জ্য সরাসরি নদী, নালা ও খালের পানিতে মিশে যাচ্ছে। যা পরিবেশ ভারসাম্যের ওপর হুমকির সরূপ। আর সেফটি ট্যাংক নির্মাণ না করে পৌরসভার ড্রেনে ল্যাট্রিনের ময়লার পাইপ সংযোগ এখনও বহাল রেখেছেন অনেকেই। ওই কাজগুলো বন্ধের পাশাপাশি  সকলকে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, পৌরসভা ভবিষ্যতে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।