শ্বশুরের সাথে গরুব্যবসা করতে গিয়ে ঘরজামাইসহ ৭ জন শ্রীঘরে : ৫টি গরু উদ্ধার

ধুরন্ধর

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ধুরন্ধর শ্বশুরের সাথে গরুব্যবসা করতে গিয়ে ঘরজামাই ইমরান আলীসহ ৭ জন এখন শ্রীঘরে। শ্বশুরের দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গতকাল জামাইসহ ৭ জনকে আটক করে। সেই সাথে জামাই’র আয়ত্বে থাকা ৫টা গরু উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রামসূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার জলঢাকার ইমদাদুল হকের ছেলে ইমরান আলীর সাথে বেশ কয়েক বছর আগে আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুরের নওশাদ খানের ছেলে আলম হোসেনের মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে ইমরান আলী গোবিন্দপুরে শ্বশুর বাড়ি ঘর জামাই হিসেবে বসবাস করে আসছেন। এক পর্যায়ে ধুরন্ধর শ্বশুর জামাইকে গরু মোটাতাজাকরণ ব্যবসার প্রস্তাব দিলে জামাই রাজি হয়। কয়েক দফায় গরু কেনা ও গরুর খাবার কেনার কথা বলে প্রায় ৫ লাখ টাকা জামাই’র নিকট থেকে শ্বশুর গ্রহণ করে। পরে ঢাকায় গরু বিক্রি করে বাড়ি ফিরে হিসেব দিতে গিয়ে ৩ লাখ টাকা লস হয়েছে বলে শ্বশুর জানায়। এ লোকসানের বিষয়টি জামাই স্বাভাবিকভাবেই মেনে নেন। এরপর নতুন করে গরু কিনতে ও খাবার কিনতে জামাই আবারও শ্বশুরকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন। গরুব্যবসায় কোনো ভাবেই লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে জামাই গরু ব্যবসা গুটিয়ে অন্য ব্যবসা করতে মনস্থির করেন। কিন্তু কোনোভাবেই শ্বশুর জামাইয়ের টাকা ফেরত দিতে না চাইলে এক পর্যায়ে গ্রামে সালিসও হয়। এই সালিসকারীদের একজন ছিলেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিয়ার রহমান ফারুক। তিনি জানান, সালিসে শ্বশুর আলম গরুব্যবসায় ৩ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। বাকি ৩ লাখ টাকা গরু বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেন নি ।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে জামাই টাকার জন্য দাবি করে আসলেও শ্বশুর জামাই’র দাবিকে আমলে নিচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে গতকাল বুধবার জামাই ইমরান আলী ৮/১০ জন লোক নিয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে ৫টি গরু খুলে নিয়ে আলমডাঙ্গা গরু হাটে বিক্রি করতে গেলে বাধে বিপত্তি। শ্বশুর বিষয়টি জানতে পেরে আলমডাঙ্গা থানায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে গরু চুরির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে পুলিশ আলমডাঙ্গা রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে থেকে জামাইসহ ৭ জনকে আটক করে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। আটককৃতরা হলেন- জামাই ইমরান আলী (২৮), ফরিদপুর দোয়ারপাড়ার মৃত শফি উদ্দীনের ছেলে বিট্টু (১৯), গোবিন্দপুর আরশেদ আলীর ছেলে আল আমিন (২১), একই গ্রামের ফরজন আলীর ছেলে রফিক (২৪), একই গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী (১৯), আক্কাস আলীর ছেলে ইরাব আলী (২০) ও স্টেশনপাড়ার টগরের ছেলে অটল (১৯)। সে সময় পুলিশ তাদের নিকট থেকে ৫টি গরু উদ্ধার করেছে। আজ বৃহস্পতিবার আটককৃতদের সংশ্লিষ্ট মামলায় আদালতে হাজির করা হয়েছে।