যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি হামি গ্রেফতার

??????

শেখ শফি: মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকারি ডিগ্রি কলেজের সাবেক লাইব্রেরিয়ান জেলা কৃষক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ায়েচ আলী হত্যার সাজাপ্রাপ্ত আসামি হামি ওরফে হামিদুল (৫০) গ্রেফতার হয়েছে। মুজিবনগর উপজেলার বিশ্বনাথপুর আইসি ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই ইয়ামিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গতকাল শনিবার ভোরের দিকে তাকে বিদ্যাধরপুর গ্রাম থেকে গ্রেফতার করেন। মুজিবনগর থানা পুলিশ গতকালই আদালতের মাধ্যমে মেহেরপুর কারাগারে পাঠিয়েছে। হামি ওরফে হামিদুল মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর ইউনিয়নের বিদ্যাধরপুর গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে ও ওয়ায়েচ হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
উল্লেখ্য, মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলীর বড় ছেলে ওয়ায়েচ আলী। তিনি ছিলেন মুজিবনগর উপজেলার দারিয়াপুরস্থ তৎকালীন মুজিবনগর ডিগ্রি কলেজের লাইব্রেরিয়ান। সাথে তার একটি রাজনৈতিক পরিচয় ছিলো। তিনি ছিলেন জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক। চাকরি ও সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি একটি ব্যবসা করতেন। ২০০৫ সালের ১৮ মে রাত ৯টার দিকে মোনাখালী-দারিয়াপুর ব্রিজের পশ্চিম মাথায় বিদ্যাধরপুর এলাকায় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে একদল সন্ত্রাসী তার ওপর বোমা নিক্ষেপ করে। এতে তিনি রক্তাক্ত জখম হন। ওই রাতে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ঢাকায় নেয়া হয়। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেলে ১৮ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এরমধ্যেই তার দুটি পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে হয়। অবশ্য তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা তার পাশে গেছেন। চিকিৎসার খোঁজ-খবর নিয়েছেন এবং চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের অঙ্গীকার দিয়েছিলেন। তারপরও স্ত্রী-সন্তান, পিতা-মাতা ও আত্মীয় স্বজনসহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের ছেড়ে তাকে চলে যেতে হয় না ফেরার দেশে।
মামলা ও বিচার: বোমা হামলার ঘটনার পরপরই এক সন্ত্রাসীকে আটক করে এলাকাবাসী। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ৮ জনকে আসামি করে নিহত ওয়ায়েচ আলীর পিতা দারিয়াপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী ৮ জনকে আসামি করে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওয়ায়েচ আলী মারা যাওয়ার পর আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ ওই মামলা আসামিদের বিরুদ্ধে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। ওই মামলার বিচারে ৮ আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ৬ জন হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছে। মামলার পলাতক ২ আসামির মধ্যে বিদ্যাধরপুর গ্রামের আনার রাজশাহীতে মারা যায়। পরে তাকে মেহেরপুরে দাফন করা হয়। পতালক অপর আসামী হামি ওরফে হামিদুল ঘটনার পরপরই বিদেশে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ প্রবাসে থাকার পর প্রায় ২ বছর আগে দেশে ফেরে এবং তাবলিগ জামায়াতের নামে পালিয়ে বেড়ায়। গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে।