মেহেরপুর শহরের প্রধান সড়কের ওপর গো-খাদ্য বিক্রি!

বাড়ছে জনদর্ভোগ : সৌন্দর্য হারাচ্ছে শহর

মেহেরপুর অফিস: গো-খাদ্যের সঙ্কটে ঘাস লাভজনক হওয়ায় মেহেরপুরের চাষিরা নেপিয়ার ঘাসচাষের দিকে ঝুঁকেছেন। এক শ্রেণির মানুষ অল্প পুঁজি নিয়ে ঘাসের ব্যবসা করে ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে মেহেরপুর শহরের মতো একটি জনগুরুত্বপূর্ণ শহরে ঘাস তথা গো-খাদ্য বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। ব্যস্ত সড়কের ওপর গো-খাদ্য বিক্রিতে এক দিকে রাস্তা নোংরা হচ্ছে। অন্যদিকে দিনের পর দিন ঘটে যাচ্ছে ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা। এর প্রতিকারে সম্প্রতি পৌর কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত সড়কের ওপর গো-খাদ্য বিক্রিতে বাধ সেধেছে।

মাঠের পর মাঠ সবজিচাষের জন্য মানুষ গবাদি পশু বাড়ি থেকে বের করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে মেহেরপুরের খামার মালিকরা ও সৌখিন গবাদি পশু পালনকারীরা খাস-পাতা কিনে তাদের গবাদি পশু পালছেন। বর্তমানে খৈল, ভূষি আর বিচুলির দাম আকাশ ছোঁয়া। বিচুলির চেয়ে সবুজ ঘাস ও পাতায় পুষ্টি আর খাদ্যগুণ বেশি। ঘাস-পাতা খেয়ে গাভী তুলনামূলকভাবে দুধ অনেক বেশি দেয়। তাই খাদ্য ঘাটতির প্রতি অভিযোগ না করে গো খাদ্যের জন্য ঘাসের প্রতি অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সৌখিন গবাদি পশু পালনকারী ও খামার মালিকরা। আর ওই সব গো-খাদ্য শহরের প্রধান সড়কের ওপর বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা শহরে নেপিয়ার ঘাস, কাঁঠালপাতা ও বিচুলিসহ গো-খাদ্য বিক্রির জন্য নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই। তাই এসব গো-খাদ্য জেলা শহরের হোটেলবাজার, নতুনপাড়া স্কুলমোড়, কোর্টমোড়, বড়বাজার, কাথুলী বাসস্ট্যান্ড, ওয়াপদা মোড়, কলেজ মোড় ও পার্কের সামনে রাস্তার ওপর বিক্রি হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়কে যত্রতত্র গো-খাদ্য বিক্রি হওয়ায় শহরের পরিবেশ যেমন নোংরা হচ্ছে তেমনি প্রতিনিয়তই ঘটছে যানজটসহ ছোট-বড় পথ দুর্ঘটনা। ওইসব কারণে বিপাকে পড়ছেন পথচারীরা। জনদুর্ভোগ পোহাচ্ছেন  শহরবাসী।

এদিকে জনদুর্ভোগ কমাতে ও শহরের সৌন্দর্য রক্ষার্থে মেহেরপুর পৌরমেয়র আলহাজ মো. মোতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু নিজেই নেমেছেন রাস্তায়। গো-খাদ্য রাস্তার ওপর বিক্রি না করার জন্য তিনি নিষেধ করছেন। এতে অনেকে কর্ণপাত না করায় তিনি গো-খাদ্যে কেরোসিন ঢেলে তা নষ্ট করে দিচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান সড়কে গো-খাদ্য বিক্রিতে শহরে যানযট লেগে থাকছে। ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এছাড়া শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। তাই রাস্তার ওপর গো-খাদ্য বিক্রি না করার জন্য একাধিকবার বলা হয়েছে। গো-খাদ্য বিক্রেতারা কর্ণপাত না করায় আমি নিজেই রাস্তায় নেমেছি। আগামী দিন থেকেও এ অভিযান আরো জোরদার করা হবে বলে তিনি আরো হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শহরের পৌর গো-হাটে গো-খাদ্য বিক্রিতে পৌরসভার আপত্তি নেই। তিনি আরো বলেন, যারা গবাদি পশু পালন করছেন তাদের জন্য গো-হাট থেকে গো-খাদ্য কেনা কোনো সমস্যাই নয়।