মেহেরপুর জেনারেল ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়ায় বারান্দার পাশে সন্তান প্রসব

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রসূতি রোগীকে ক্লিনিকে নেয়ার জন্য নার্সের চাপ

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ড থেকে এক প্রসূতিকে ক্লিনিকে যাওয়ার নাম করে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রসূতি বিভাগের ইনচার্জ রাহেলী মিনতি রানীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং ওই নার্সের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামী বুধবারের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

হাসপাতালে রোগীর স্বজনরা জানান, মেহেরপুর সদর উপজেলার বামনপাড়ার সাইফুলের স্ত্রী রোজি খাতুনের প্রসব বেদনা শুরু হলে সোমবার ভোরের দিকে তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ সময় ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে ছিলেন সেবিকা মিনতি রানী। সকাল ৮টার দিকে রোগীর প্রসব যন্ত্রনা বেড়ে গেলে রোগীর সাথে থাকা তার চাচি মোমেনা খাতুন নার্সসহ আয়াদের অনুরোধ করে ভালভাবে দেখার জন্য। এ সময় মিনতি রানী তাদের অনুরোধ উপেক্ষা করে আশেপাশের ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য ওয়ার্ড থেকে তাদের বের করে দেয়। প্রসূতি রোজি খাতুন হাসপাতালের সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় তার প্রচন্ড প্রসব ব্যথা বেড়ে যায় এবং হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে নেতিয়ে পড়ে। পুণরায় অনুরোধ করা হলে অন্য এক নার্সের সহায়তায় প্রসূতি ওয়ার্ডের লেবার রুমে নিয়ে বাচ্চা প্রসব করানো হলে ফুটফুটে একটি সন্তানের জন্ম নেয়। এ সময় সাহায্যকারী নার্সকেও অপমান করে মিনতি রানী। এ খবর রোগীর স্বজনরা জানতে পেরে হাসপাতালে ছুটে গিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন এবং নার্স মিনতি রানী সাহার শাস্তির দাবি করেন।

রোজি খাতুনের চাচি মোমেনা বেগম বলেন, ভোরের দিকে দেবরের মেয়ে রোজী খাতুনের প্রসব বেদনা শুরু হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। হাসপাতালে ভর্তি করার পর থেকে নার্সরা সেরা দেবার পরিবর্তে দুর্ব্যবহার করতে থাকে। তাদের বারবার সেবা দেবার কথা বলার পরও কোন চিকিৎসা সেবা না দিয়ে দুর্ব্যবহার শুরু করে। এক পর্যায়ে রোজির প্রসাব বেদনা উঠলে হাসপাতালের নার্স মিনতি রানী আমাদের ক্লিনিকে যাবার কথা বলে বের করে দেয়।

মেহেরপুর পৌরসভার সংরক্ষিত ওয়াডের্র সাবেক মহিলা কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার সামনে তাদের বের করে দেয়া হয়। এ সময় আমিসহ কয়েকজন রোগী এর প্রতিবাদ করলে নার্সরা আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এদিকে, এ ঘটনার পর হাসপাতালে গিয়ে নার্স রাহেলী মিনতি রানীকে পাওয়া যায়নি। রোগীর স্বজনরা জানান, ঘটনার পর থেকে মিনতি রানী আত্মগোপনে রয়েছেন। পরে মোবাইল ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মৃণাল কান্তি মণ্ডলকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৫ জুলাই বুধবারের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।