মেহেরপুরে বাল্য বিয়ের অপরাধে বরের পর এবার ঘটক শ্রীঘরে

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরে বাল্যবিয়ের অপরাধে বরের পর এবার ঘটক মহিবর রহমান ও কনের মামা আকাশ আহম্মেদকে ১০ দিনের জন্য শ্রীঘরে পাঠিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সাথে প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহীনুজ্জামান ওই রায় দেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৭ ফ্রেবুয়ারি মেহেরপুর জেলাকে বাল্যবিয়েমুক্ত জেলা ঘোষণা দেয়ার লক্ষ্যে ডিসেম্বর/১৫ ও জানুয়ারি/১৬ মাস জুড়ে মেহেরপুর প্রশাসন ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন এবং এখন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপরও এক সপ্তাহ আগে মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে উজ্জ্বল হোসেন (২৩) মেহেরপুর সদর উপজেলার আশরাফপুর গ্রামের লিটন হোসেনের কন্যা ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা আক্তার লিমাকে (১৭) বিয়ে করে। খবর পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হেমায়েত উদ্দিন মুজিবনগর থানা পুলিশ নিয়ে মহাজনপুর গ্রামে যান। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে বরের পিতা-মাতা পালিয়ে গেলেও বর উজ্জ্বলকে আটক করেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
এদিকে মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের এসআই মো. মোস্তাজাব আহম্মেদ আশরাফপুর গ্রামে গিয়ে আশাদুল মোল্লার ছেলে ঘটক মহিবর রহমান ও ওই গ্রামের কনের পিতা লিটন হোসেনকে না পেয়ে বাল্যবিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন ও পরিচালনার অপরাধে গ্রেফতার পূর্বক আসামিদের বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-১৯২৯ এর ০৫ ধারার অপরাধে একটি অভিযোগ লিখিতভাবে দায়ের করেন। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের কাউকে না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সদর উপজেলার ভূমি অফিসে হাজির হওয়ার জন্য আদেশ দেন। পরে বিয়ের ঘটক আশরাফপুর গ্রামের মহিবর রহমান ও মেয়ের মামা মেহেরপুর শহরের শিশুবাগান পাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে আকাশ আহম্মেদ সেখানে উপস্থিত হন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহীনুজ্জামান বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন-১৯২৯-এর ০৫ ধারার অপরাধের জন্য বিয়ের ঘটক ও মেয়ের মামাকে ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে এক হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।