দামুড়হুদা কেরুজ সাবজোন অফিসের স্টাফ না হয়েও ১০ বছর ধরে বিনাভাড়ায় দু শ্রমিকের বসবাস

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল: ১৯৮২ সালে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নির্মাণ করা হয় কেরু কোম্পানির সাবজোন অফিস। দামুড়হুদা সাবজোন অফিসের স্টাফদের জন্য প্রায় কোটি টাকা খরচ করে নির্মাণ করা ওই ব্যারাকে রয়েছে একটি অফিসার্স কোয়াটার (দ্বিতল ভবন), ২টি অফিস রুম এবং একটি গোডাউন। বর্তমানে এখানে মোট ১৪ জন স্টাফ কর্মরত। দামুড়হুদা সাবজোন অফিসের অফিসার্স কোয়াটারে সাবজোন প্রধানের থাকার কথা থাকলেও ওই অফিসার্স কোয়াটারে থাকেন দর্শনাস্থ ইক্ষু উন্নয়ন অফিসের অফিস সহকারী আহসান হাবিব এবং ডিহি ফার্মের কেরানি জাহাঙ্গীর হোসেন। তাও আবার বিনা ভাড়ায়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, দর্শনায় কর্মরত আহসান হাবিব প্রায় ১০ বছর এবং ডিহি ফার্মে কর্মরত জাহাঙ্গীর হোসেন ৫ বছর ধরে বিনা ভাড়ায় ওই অফিসার্স কোয়াটারে বসবাস করছেন। ফলে কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনে বর্তমানে সাশ্রয়নীতি চলাকালিন কর্তৃপক্ষের চোখে ধুলো দিয়ে কীভাবে তারা দির্ঘদিন যাবত বিনাভাড়ায় বসবাস করছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ভূক্তভোগীদের এমনটাই প্রত্যাশা।

ভূক্তভোগীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, অফিসার্স কোয়াটারে থাকার কথা এখানে কর্মরত স্টাফদের। অথচ একজনের পোস্টিং দর্শনায় আর একজনের ডিহি ফার্মে তারা ভাড়া না দিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে বহাল তবিয়তে বসবাস করে আসছে। আর যাদের পোস্টিং দামুড়হুদায় তারা থাকার জায়গা পাচ্ছে না। ভূক্তভোগীরা আরও জানান, ওই দুজনের নিজ নিজ কর্ম এলাকায় বাসাবরাদ্ধ আছে অথচ তারা ভাড়া দেয়ার ভয়ে ওখানে না থেকে থাকে দামুড়হুদায়। তারা ভাড়াতো দেয়ই না। উপরোন্ত ব্যারাকের ১৯ নারকেল গাছের সমস্ত নারকেল বিক্রি করে পকেট গরম করছে। প্রতি বছর প্রায় ১০ হাজার টাকার নারকেল বিক্রি করে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। ব্যারাকের মধ্যে বেড়ে ওঠা বেশকিছু মেহগনিগাছসহ অন্যান্য গাছ গাছালির ডালপালা কেটেও বাইরে বিক্রি করে খেয়ে ফেলছে। যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এছাড়া ব্যারাকে সিডিএদের বসার জন্য যে অফিস রুম আছে সেখানে তারা খড়ি-কাঠ ভর্তি করে রেখেছেন। ফলে বর্তমানে সিডিএদের বসার কোনো জায়গা নেই।

দামুড়হুদা সাবজোন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি অল্প কিছুদিন হলো দামুড়হুদা সাবজোনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি। আমি দায়িত্ব নেয়ার অনেক আগে থেকেই ওই দুজন এখানে থাকেন। ভাড়া না দিয়ে কীভাবে থাকেন সেটা আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনিই বলতে পারবেন। এখানে ঘর খালি নেই বলেই এখানকার স্টাফরা থাকতে পারেন না। বিষয়টি সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে দর্শনা কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তাছাড়া বিষয়টি ইতঃপূর্বে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। এদিকে এলাকার সচেতনমহল প্রশ্ন তুলে বলেছেন বর্তমান সরকার চিনি ও খাদ্য শিল্পকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে সাশ্রয়নীতি চালু করার পাশাপাশি চিনিশিল্পকে রক্ষনাবেক্ষণের লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও কিছু দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির জন্য তা বাস্তবায়নের অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই সমস্ত দুর্নীতিবাজদের বিচার হওয়া উচিত বলেও মনে করেন এলাকার সচেতনমহল।