দামুড়হুদায় গড়ে উঠেছে লগ কাঠের মোকাম : রাখছে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা

কাঠশ্রমিকরাও ফিরে পেয়েছে বেঁচে থাকার ঠিকানা

 

বখতিয়ার হোসেন বকুল: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা সদরে লগ কাঠের মোকামটি এলাকার গ্রামীণ জনপদে আর্থসামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মোকামের নাম ছড়িয়ে পড়ায় দিন দিন এর কদর কাঠ ব্যবসায়ীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

জানা গেছে, প্রায় দেড়যুগ আগে উপজেলা সদরে সমিলকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সাইজ/লগ কাঠের ব্যবসা। প্রথম দিকে এ ব্যবসা মন্তর গতিতে শুরু হলেও দিনকে দিন এর প্রসার বেড়েই চলেছে। হাতেগোনা গুটিকয়েক কাঠব্যবসায়ী এই লগ কাঠের ব্যবসা শুরু করলেও পর্যায়ক্রমে এ ব্যবসার প্রসার ঘটতে শুরু করে। পরবর্তীতে এলাকায় বেশ কয়েকটি সমিল স্থাপিত হলে শুরু হয়ে যায় লগ কাঠ ব্যবসার প্রতিযোগিতা। কাঠের চাপে সমিল গুলোতে দেখা দেয় স্থান সংকুলান। সমিলের গণ্ডি পেরিয়ে লগ কাঠ নিয়ে ব্যবসায়ীরা নেমে আসে রাস্তার পার্শ্বে। তাতে সড়কে যান চলাচলের অসুবিধা দেখা দিলে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় নিরাপদ স্থানে গড়ে উঠেছে এই লগকাঠের বিশাল মোকাম। বর্তমানে এ মোকামে নানা ধরনের লগ কাঠের মজুদ থাকায় যে কেউ তাদের চাহিদা মোতাবেক সাইজ/লগ কাঠ কিনতে পারে। এই মোকামের পাশাপাশি সমিল গুলোতেই রয়েছে আম, কাঁঠাল, শিশু, ইপিলইপিল, জামসহ নানা ধরনের কাঠের মজুদ। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকার নিরিবিলি পরিবেশে প্রতিদিন লগ কাঠের সাইজ ট্রাকযোগে চালান হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

কাঠব্যবসায়ী হামিদুল জানান, এ মোকামের সব ধরনের কাঠের মজুদ থাকে। এখান থেকে কেউ পাইকারী ও খুচরা দরে চাহিদা মোতাবেক কাঠ কিনতে পারে। তিনি আরও জানান, তার মতো এ মোকামে  তুরাফ, আদম, হেকমত, তাহের, জহুর, রুপচাঁদসহ অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে এ লগকাঠের ব্যবসা করে আসছে। এ মোকামে দেশের বিভিন্ন শহর থেকে কাঠের বড় বড় ব্যবসাদার আসে এবং মোকাম থেকে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঠের চালান হয়ে থাকে। কাঠ মোকামটিতে সব সময় কাঠের মজুদ থাকায় এর চাহিদা এখন দেশের যেকোন স্থানের চেয়ে অনেকটাই বেশি। এ মোকামে দিনমজুর আমজাদ বলেন, প্রায় ৮ বছর যাবত এ মোকামে করাত দিয়ে কাঠ কেটে সাইজ করে দিই। এখান থেকে যা আয় হয় তা দিয়ে সংসার ভালোভাবেই চলে যায়। এ মোকামকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পেয়েছি।

যশোর থেকে শিশু ও কাঁঠাল কাঠের ট্রাক লোড দেয়ার জন্য আসা রহিম বক্স নামের এক কাঠব্যবসায়ী বলেন, এখান থেকে কিছু শিশু ও মেহগনি লগ কাঠ কিনবো, আর জয়রামপুর এলাকা থেকে কাঁঠাল কাঠ কিনে এলাকায় ফিরবো। তবে সকল সময় বিভিন্ন ধরনের কাঠের মজুদ থাকায় মোকামটি এলাকায় যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা মনে করেন মোকামটি একদিকে যেমন এলাকার গ্রামীণ জনপদে আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। অপরদিকে এলাকার কাঠ শ্রমিকরাও ফিরে পেয়েছেন তাদের বেঁচে থাকার ঠিকানা।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *