দামুড়হুদায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে পণ্ড : বরসহ দু ঘটকের কারাদণ্ড

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদায় ইউএনও’র হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ে পণ্ড হয়ে গেছে। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক বরসহ দু ঘটকের কারাদণ্ড দিয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকেল ৪টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান উপজেলার কাদিপুর গাংপাড়ায় বিয়ে বাড়িতে হাজির হন এবং বিয়ের মজলিশ থেকে বর ও দু ঘটককে আটক করেন।

জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের কাদিপুর গাংপাড়ার রবজেল আলীর একমাত্র মেয়ে লোকনাথপুর সহশিক্ষা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আঁখি তারার (১৪) সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের উকতো গ্রামের বাবলু মণ্ডলের নাবালক ছেলে হাসিবুল হোসেনের (১৫) বিয়ের দিন ধার্য ছিলো। গতকাল সোমবার দুপুরে বর হাসিবুলসহ প্রায় ৫০ জন বরযাত্রী বিয়ে বাড়িতে হাজির হয়। গোপন সংবাদ পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রাজ কুমার পাল ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিয়ে বাড়িতে হানা দেন। এ সময় বরসহ বরযাত্রীদের খাওয়া-দাওয়া চলছিলো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বর-কনের জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখতে চাইলে তারা তা দেখাতে ব্যর্থ হয়। ফলে বরসহ বাল্যবিয়ের সহায়তাকারী হিসেবে দু ঘটক উকতো গ্রামের মৃত আজিজুল মালিথার ছেলে লিটন (৩৪) ও একই গ্রামের মৃত আশকার আলীর ছেলে রমজানকে (৩৬) আটক করে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৩ জনেরই ১০ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে মেয়ের অসুস্থ বাবা-মাকে এ দফায় রেহাই দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কাজে সহযোগিতা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সিএ ফয়জুল ইসলাম ও দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই আবু জাহের ভূইয়া। এদিকে ইউএনও’র উপস্থিতি টের পেয়ে কাজি সটকে পড়েন বলে প্রতিবেশীরা জানান।