ড. রাশিদ আসকারী বাংলাদেশের সেরা ১০ উদীয়মান ইংরেজি লেখকদের তালিকাভুক্ত

 

স্টাফ রিপোর্টার:ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট ড. রাশিদ আসকারী একটি আর্ন্তজাতিক লেখক জরিপে বাংলাদেশের সেরা ১০ উদীয়মান ইংরেজি লেখকদের তালিকাভুক্ত হয়েছেন। জরিপটি করেছে ‘দ্য অথার সাকসেস কোচ’ (The Author Success Coach)নামের একটি আর্ন্তজাতিক প্রকাশনা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের ইংরেজি ভাষার গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের ওপর জরিপ পরিচালনা করে এবং তাদের লেখার গুণগত মান ও আঙ্গিক বিবেচনা করে ১০ জনের একটি তালিকা প্রণয়ন করে। তালিকার র্শীষে রয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ‘দ্য গোল্ডেন এইজ’ খ্যাত ইংল্যান্ড প্রবাসী লেখিকা তাহমিমা আনাম। তালিকার দ্বিতীয় স্থানেই রয়েছেন ড. রাশিদ আসকারী। তালিকাভুক্ত অন্যরা হলেন- মারিয়া চৌধুরী, কানিজ আহমেদ, কায়সার হক, ফারাহ গুজনভী, মাহমুদ রহমান, খাদেমুল ইসলাম, আফসান চৌধুরী এবং ফকরুল ইসলাম। সংস্থাটি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ১০ রাজনীতিবিদ, শ্রেষ্ঠ ১০ সঙ্গীতশিল্পী, শ্রেষ্ঠ ১০ সংবাদপত্র, শ্রেষ্ঠ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সমজাতীয় জরিপ পরিচালনা করেছে।

মধ্য ৯০’র পর বাংলাদেশে যে ক’জন হাতে গোনা লেখক সমান দক্ষতায় বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখালেখি করছেন ড. রাশিদ আসকারী তাদের অন্যতম। তিনি যুগপৎ লেখক, কলামিস্ট, সাহিত্যিক এবং রাজনীতি ও সংস্কৃতি বিশ্লেষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি অধ্যাপক। ড. আসকারীর জন্ম রংপুর জেলার মিঠাপুকুরে। তার পিতা ছিলেন স্বনামধন্য একজন ইংরেজি শিক্ষক। আসকারী ১৯৮০ সালে মেধা তালিকায় স্থানসহ এসএসসি এবং ১৯৮২ সালে এইচএসসি পাস করেন। তিনি কৃতিত্বের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন যথাক্রমে ১৯৮৫ ও ১৯৮৬ সালে। পরবর্তীতে প্রখ্যাত লেখক নীরদ সি. চৌধুরী ও ভারতীয় ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ে অভিসন্দর্ভ রচনা করে ভারতের পুনে ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০৫ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. আসকারী ১৯৯০ সালে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০০৫ সালে প্রফেসর পদে উন্নীত হন। তিনি একাধিকবার একই বিভাগে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন; তার সম্পাদনায় বিভাগ ও অনুষদে একাধিক সংখ্যক গবেষণা জার্নাল প্রকাশিত হয়।

তিনি ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত সৌদি আরবে কিং খালিদ ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত ‘মুমূর্ষু স্বদেশ’ শীর্ষক গদ্যগ্রন্থ প্রকাশের মধ্যদিয়ে ড. আসকারী লেখালেখির জগতে আত্মপ্রকাশ করেন। কোলকাতার ‘জিজ্ঞাসা’ পত্রিকায় তার একাধিক ছোটগল্প ও প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। ব্রনেই টাইমসথেকে শুরু করে আফ্রিকান হেরাল্ড এক্সপ্রেসপর্যন্ত অসংখ্য দেশি-বিদেশি পত্রিকায় স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা অন্দোলন থেকে শুরু করে নারীবাদ, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদের মতো জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তার ক্ষুরধার কলাম প্রকাশিত হয়েছে।

ভারতের ‘কন্টেম্পোরারি লিটারারী রিভিউ’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাইট স্টেট ইউনিভার্সিটি ওহিও, ডেটন থেকে প্রকাশিত ‘জার্নাল অব পোস্ট কলোনিয়াল কালচার অ্যান্ড সোসাইটি’ পত্রিকায় তার একাধিক ইংরেজি ছোটগল্প প্রকাশিত হয়। ২০১০ এবং ২০১২ সালে প্রকাশিত ইংরেজি গ্রন্থ ‘দ্য উনডেড ল্যান্ড’ এবং ‘নাইনটিন সেভেনটি ওয়ান অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’ ইতোমধ্যে সুধীমহলে সমাদৃত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের ১৫০তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে পাঠক সমাবেশ ঢাকা কতৃক প্রকাশিত ২৫ খণ্ড রবীন্দ্র রচনাবলীর মধ্যে ১৯, ২০ ও ২১ খণ্ডে তিনি রবীন্দ্রনাথের ইংরেজি রচনাসমূহ ভূমিকাসহ সম্পাদনা করেন। দেশি-বিদেশি জার্নালে তার রয়েছে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ। তার ‘উত্তরআধুনিক সাহিত্য ও সমালোচনা তত্ত্ব’ (২০০২) গ্রন্থটি ওই বিষয়ে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ।

তার একাডেমিক আগ্রহের অন্যতম বিষয়: আধুনিক ও উত্তরাধুনিক সাহিত্য, ঔপনিবেশিক ও উত্তর-ঔপনিবেশীক সাহিত্য, দক্ষিণ এশীয় ইংরেজি সাহিত্য, সমালোচনা তত্ত্ব এবং ক্রিয়েটিভ রাইটিং। বর্তমানে তিনি একটি ইংরেজি উপন্যাস রচনার কাজ করছেন।

ড. আসকারী লেখালেখির পাশাপাশি বিবিধ পর্যায়ে সামাজিক ও সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। বর্তমানে তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করছেন।