ঝিনাইদহে বিভিন্ন সড়কে গাছ চুরি করে কেটে নেয়ার উৎসব চলছে

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কের পাশ থেকে চুরি করে গাছ কাটা হচ্ছে। আবার ঈদকে সামনে রেখে প্রতি রাতে কালীগঞ্জ কোটচাদপুর ও কালীগঞ্জ যশোর সড়কে ডাকাতরা রাস্তার দু পাশের গাছ কেটে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এদিকে সুন্দরপুর-দুর্গাপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ব্যক্তিরা বলেন, ২০০০ সালের দিকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ছালাভরা-ভাটপাড়া-কাদিপুর বনায়ন সমিতি বন বিভাগের সহযোগিতায় সড়কের পাশে বনায়ন করে। সমিতির সদস্যরা যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের কালীগঞ্জের ছালাভরা থেকে কাদিপুর পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তায় নানা জাতের প্রায় ১ হাজার ২শ’ বনজ গাছ লাগান। ওই সড়কের দু পাশে রয়েছে ছালাভরা, ভাটপাড়া ও কাদিপুর গ্রাম। এই তিন গ্রামের লোকজনকে সাথে নিয়ে তারা বনায়ন সমিতি গঠন করেন। কিন্তু এখন সেখানে ৪শ’ থেকে ৫শ’ গাছ আছে।

সড়কের দু পাশের গাছগুলো বড় হয়ে গেছে। গাছের সারিতে বেশ কিছু কাটা গাছের গুঁড়ি দেখা যায়। আবার এক জায়গায় দেখা যায়, গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। কিন্তু কাটা গাছ পাশেই পড়ে আছে। গত ৫ মাসে ওই সড়কের শতাধিক গাছ কাটা হয়েছে। আর গোটা ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়ক থেকে কাটা হয়েছে অসংখ্য গাছ। বেশি কাটা হচ্ছে ওই ইউনিয়নের ছালাভরা-কোলা সড়কের কাদিপুর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের মেহগনি, চটকা, বাবলা, কড়ইসহ মূল্যবান গাছ গুলো। রাতের আঁধারে চোরেরা এই গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এক রাতে চোরেরা ভাটপাড়া এলাকায় একটি গাছ কাটে। কাটার পর সেটা বিদ্যুতের খুঁটির ওপর পড়ে যায়। ফলে তারা আর গাছ নিয়ে পালাতে পারেনি। এ কারণে এলাকায় বেশ কয়েক দিন বিদ্যুত ছিলো না।

কাদিপুর গ্রামের বাসিন্দা তোজাম্মেল হোসেন বলেন, কথা ছিলো এলাকার লোকজন গাছগুলো দেখাশোনা করবেন। আর গাছগুলো বড় হওয়ার পর বিক্রির টাকা সমিতি পাবে ৬০ শতাংশ, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ পাবে ৩০ শতাংশ, বাকি ১০ শতাংশ পাবেন গাছের কারণে রাস্তার পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মালিকরা। একেকটি গাছ বর্তমানে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। এলাকাবাসী আরও বলেন, তাদের এলাকায় একটি গাছ চোর চক্র (সিন্ডিকেট) গড়ে উঠেছে। গত ৫ মাস হলো এই চুরির পরিমাণ বেড়ে গেছে। এর আগে গাছ কাটার সময় এলাকার লোকজন বুঝতে পেরে চোরদের তাড়া করেন। তখন তারা কাটা গাছ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশকে তারা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে পুলিশ কোনো তৎপরতা দেখায়নি।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার নীরব হোসেন ও এসআই লিটন কুমার বিশ্বাস বলেন, এর আগে চোরদের কাটা কয়েকটি গাছ জব্দ করে নিয়ে থানায় আনা হয়েছে। চোরদের ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে।