ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ডাকাতি ও ছিনতাই আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা

 

ঝিনাইদহ অফিস: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একের পর এক ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব ডাকাতির ঘটনা বেশিরভাগই দিনের বেলা ও সন্ধ্যারাতে ঘটছে। গত দু মাসে একের পর এক এসব ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে আটক বা তথ্য অনুসন্ধান করতে পারেনি। ফলে ছিনতাই ও ডাকাতি অনেকটা প্রকাশ্যে হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের লিটন হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দিয়ে ডাকাতরা সোনার গয়নাসহ ১৪ লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা গৃহিনী দিপ্তী বেগমকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। শহরের মহিলা কলেজ রোডে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ওই দিন বিকেলে কালীগঞ্জ শহরের ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ১২ লাখ টাকা তুলে বাড়িতে রাখেন ব্যবসায়ী লিটন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে একদল ডাকাত তাদের ভাগ্নে পরিচয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে এ  ডাকাতি করে।

২৬ অক্টোবর ঝিনাইদহে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীদের ৪৭ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই দিন সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-খুলনা সড়কের কালীগঞ্জ উপজেলার আমবাগান এলাকায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ঈশ্বরদী উপজেলার চামড়াব্যবসায়ী মোহাম্মদ শুকুর আলীসহ ৫ জন একটি মাইক্রোবাস নিয়ে যশোর রাজারহাটে চামড়া কেনার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন। কালীগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-খুলনা সড়কের আমবাগান নামক স্থানে পৌঁছুলে ডিবি পুলিশের পোশাক পরিহিত ৮ সদস্যের একদল দুর্বৃত্ত ব্যবসায়ীদের গতিরোধ করে। এরপর তাদের গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাস্তার এক পাশে নিয়ে বেধড়ক মারপিট করে তাদের কাছে টাকা ৪৭ লাখ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

এর পরের দিন বিকেলে কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন শিবনগরে জামাত আলীর বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ঘরে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ১১ সেপ্টেম্বর রাতে একই পাড়ায় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা, সোনার গয়নাসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে যায় ডাকাতরা। এ সময় ডাকাতদল আরও এক কোটি টাকার দাবিতে বাড়ির মালিক ব্যবসায়ী ও বাড়ির মালিক রানা শেখকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহৃত রানার দু ভাই হামিদ শেখ ও বাপ্পি শেখ ইতালি প্রবাসী বলে জানা গেছে।

১৮ অক্টোবর কালীগঞ্জে ইসলামী ব্যাংকের নিরাপত্তারক্ষী আয়ুব হোসেনকে হত্যা করে ৭২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ডাকাতরা তাকে হত্যা করে ব্যাংকের ভোল্ট ভেঙে টাকা লুট করে। ডাকাতরা যাওয়ার আগে ব্যাংক অভ্যন্তরের সিসি ক্যামেরা লাগানো কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক নিয়ে যায়। একের পর এক ডাকাতি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

ডাকাতি ও ছিনতায়ের ঘটনা বৃদ্ধির ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মনির উদ্দিন মোল্লা জানান, এসবের বেশিরভাগই ডাকাতি নয়। একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র বিভিন্ন সময় ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে।