জীবনের সেরা জুটি অঞ্জলির সাথে

মাথাভাঙ্গা মনিটর: স্কুল ক্রিকেটে বিনোদ কাম্বলির সাথে গড়েছিলেন রেকর্ড ৬৬৪ রানের জুটি। এতো বড় হয়তো নয়, দীর্ঘ দু যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তার আছে এমন অসংখ্য জুটি। জুটির পর জুটি গড়ে তিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। তবে লিটল মাস্টারের কাছে তার সেরা জুটি প্রেমময় স্ত্রী অঞ্জলির সাথেই।

নিছক মজা নয়, টেন্ডুলকার নিজেই জানিয়েছেন কথাটা। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গতকাল নিজের বিদায়ী অনুষ্ঠানে ক্রিকেট কিংবদন্তী জানান, তার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তটা সেদিন, যেদিন প্রথম দেখেছিলেন অঞ্জলিকে। টেন্ডুলকারের কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে এসব কথা শুনে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি অঞ্জলি। টেলিভিশনের পর্দায় স্পষ্ট দেখা যায়, তিনি কাঁদছেন। অঞ্জলিকে টেন্ডুলকার প্রথম দেখেছিলেন মুম্বাই এয়ারপোর্টে, ইংল্যান্ড সফর থেকে ফেরার সময়। মুহূর্তের ভালো লাগা থেকে পরিচয়, এরপর মন দেয়া-নেয়া। পাঁচ বছরের প্রেম পরিণয়ে রূপ নেয় ১৯৯৫ সালে। বয়সে ছয় বছরের বড় অঞ্জলিকে বিয়ে করেন টেন্ডুলকার। বিয়ের পর অঞ্জলি মেহতা হয়ে যান অঞ্জলি টেন্ডুলকার। গুজরাটের শিল্পপতি আনন্দ মেহতা ও ব্রিটিশ সমাজকর্মী অ্যানাবেল মেহতার মেয়ে অঞ্জলি ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন চিকিত্সক। এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণি পেয়েছিলেন। হয়তো চিকিত্সা পেশায়ও ভালো করতেন। কিন্তু বেশি দিন সেটা চালিয়ে যাননি অঞ্জলি। টেন্ডুলকারের জন্য উত্সর্গ করেন নিজের সব স্বপ্ন, ক্যারিয়ার। টেন্ডুলকারকে সঙ্গ দেয়া, তার পাশে ছায়া হয়ে থাকা; টেন্ডুলকার যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারেন, হয়ে উঠতে পারেন বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। বিদায়ী অনুষ্ঠানে স্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা নয়, টেন্ডুলকার দিলেন অর্ঘ্য। অনন্য এক প্রতিমার পায়ে তা যেন এক অঞ্জলিও বটে। টেন্ডুলকারের ভাষায়, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ঘটনাটি ঘটেছিলো ১৯৯০ সালে, যেদিন প্রথম আমার স্ত্রী অঞ্জলিকে দেখেছিলাম। আমি জানি, খুব ভালো একজন চিকিত্সক হতে পারতো অঞ্জলি। যখন আমরা সন্তান নেয়ার কথা ভাবলাম, তখন ও দায়িত্বটা নিলো। আমাকে বললো, ‘তুমি তোমার ক্রিকেট চালিয়ে যাও। পরিবারে দায়িত্ব নেব আমি।’ অঞ্জলিকে ধন্যবাদ দিয়ে লিটল মাস্টার বলেন, ‘আমি ওকে বলেছি, জীবনে যতোজনের সাথে জুটি গড়েছি, এর মধ্যে তুমিই সেরা।’