জীবননগর লক্ষ্মীপুরে আহলে হাদিসপন্থিদের নবনির্মিত মসজিদ ভাঙচুর

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলা শহরের পুরাতন লক্ষ্মীপুরে আহলে হাদিসপন্থিদের নবনির্মিত একটি মসজিদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। পবিত্র রমজান মাসে নামাজসহ বিশেষ করে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য চাটাইয়ের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিলো। মসজিদের মুসল্লিদের কথাবার্তা এবং নামাজ পড়ার ধরণ দেখে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা গত শুক্রবার হামলা চালিয়ে মসজিদটি ভেঙে দেয়। এসময় ভাঙচুরকারীদের মধ্যে একজন আহত হন। এ ঘটনায় উভয়পন্থিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে প্রশাসন বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে।

এলাকাবাসী জানায়, পুরাতন লক্ষ্মীপুরে মসজিদ থাকলেও আহলে হাদিসপন্থিরা গত সপ্তাহে এখানে একটি মসজিদ নির্মাণ করে। চাটাইয়ের বেড়া ও টিনের ছাউনি দিয়ে এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের মুসল্লি ৭-৮ জন। তারা এখানে নামাজ আদায় করে থাকেন। আহলে হাদিসপন্থিরা বেলা দেড়টার স্থলে দুপুর ১২টায় জুমার নামাজ ও ২০ রাকায়াত তারাবির স্থলে ৮ রাকাত নামাজ আদায় করছিলেন।

মসজিদ সংলগ্ন প্রতিবেশী শহিদুল ইসলাম জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এ মসজিদের মুসল্লি। তারা মসজিদে বসে ফিসফাস করে কথাবার্তা বলতেন। যা এলাকাবাসীর মনে সন্দেহের সৃষ্টি করে। গত শুক্রবার জুমার নামাজের পূর্বে তাদের সাথে বসার কথা ছিলো। এলাকাবাসী মসজিদে গিয়ে দেখেন দুপুর ১২টার পর পরই তারা জুমার নামাজ আদায় করে বেরিয়ে আসছেন। উপস্থিত এলাকাবাসীকে দেখে আহলে হাদিসপন্থিরা আপত্তিকর কথাবার্তা বলা শুরু করে। এসময় উত্তেজিত এলাকাবাসী হামলা চালিয়ে মসজিদটি ভেঙে দেয়। উভয়পন্থিদের মধ্যে হাতাহাতির সময় নাসির উদ্দিন নামে একজন আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহলে হাদিসের উপজেলা নেতা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, এলাকাবাসীর সাথে বসার কোনো কথা ছিলো না। তাদের উদ্দেশ্য ছিলো মসজিদ ভাঙা। হামলা চালিয়ে তারা মসজিদ ভেঙে দিয়েছে। হামলাকালে উপজেলা ইন্সেট্রাক্টর মুহা. হাবিবুর রহমান আহত হন বলে তিনি দাবি করেছেন। আগামী ৫ জুন এ নিয়ে প্রশাসন বসবে বলে জানান তিনি।

ওসি (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ নিয়োগ করা হয়। উভয়পন্থিদেরকে শান্ত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এএসপি (সার্কেল) মো. কলিম উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেলিম রেজা জানান, গতকাল শনিবার তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন। সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।