জীবননগরে শীতকালীন সবজিক্ষেতে ব্যাপকহারে ক্ষতিকর কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে

জীবননগর ব্যুরো: অটো ক্রপ কেয়ার লিমিটেডের মারশাল। মূল উপাদান কার্বোসালফান। বোতলের গায়ের লেবেলে লেখা আছে সাবধানতা: এটি প্রয়োগের ২১ দিনের মধ্যে ফসল খাওয়া যাবে না। বেগুনের মাজরা পোকা দমনে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ম্যাকডোনাল্ড লিমিটেডের সানটাপ ও করবেল ইন্টারন্যশনাল লিমিটেডের কারটাপ ব্যবহার করা হয় পটল, ঢেঁড়শ, টমেটো ও বেগুনের ডগা এবং ফল ছিদ্রকারী পোকা দমনে। এটিরও বোতলের গায়ে লেখা আছে সাবধানতা: ব্যবহারের ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে ফসল খাওয়া যাবে না। অথচ এসব নিয়মের প্রতি তোয়াক্কা না করে চাষিরা সবজিক্ষেতে কীটনাশক স্প্রে করার পর পরই ক্ষেত থেকে সবজি তুলে তা বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে আসছেন।

উপজেলার উথলী, সেনেরহুদা, মৃগমারী, দেহাটি, কাশিপুর, মুক্তারপুর, আন্দুলবাড়িয়া, বেনীপুর, গয়েশপুর, ধোপাখালী ও মানিকপুর এলাকায় ব্যাপকহারে শীতকালীন সবজি হিসেবে বেগুন, পটল, ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা, লাউ, চালকুমড়া, উঁচতে, করোলা, বরবটি, ডাটা শাক, লাল শাক ও শিমের আবাদ করা হয়েছে। আর এ সব সবজিক্ষেতে মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর তীব্র বিষযুক্ত কীটনাশকগুলো দেদারছে ব্যবহার করা হচ্ছে।

বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে বেগুনক্ষেতে। চাষিরা রিজেন্ট ও মারশাল এ দুটি কীটনাশক বেগুনক্ষেতে বেশি ব্যবহার করছে। প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে দু বার বেগুন ক্ষেতে এ কীটনাশক স্প্রে করা হয়। নিয়মানুযায়ী কীটনাশক স্প্রে করার ২১ দিনের মধ্যে ওই সবজি খাওয়া যাবে না। কিন্তু চাষিরা এ নিয়মের তোয়াক্কা না করে স্প্রে করার পর পরই ক্ষেত থেকে বেগুন তুলে তা বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে আসছেন। উপজেলার উথলী গ্রামের সবজি চাষি আব্দুস সালাম জানান, এক বিঘা জমিতে বেগুনচাষ করেছি। কিন্তু পোকার আক্রমণ বেশি হওয়ায় কড়া বিষযুক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, কীটনাশক ব্যবহারের বদলে সবজিক্ষেতে চাষিদের আইপিএম পদ্ধতিতে পোকা-মাকড় দমন করতে উপদেশ দেয়া হয়ে থাকে। মারশাল ও রিজেন্টের মতো তীব্র বিষযুক্ত কীটনাশক ব্যবহার করতে কৃষকদের নিষেধ করা হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. হাসানুজ্জামান নূপুর জানান, কীটনাশক মিশ্রিত সবজি খাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষ পেটের পীড়াসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।