জামায়াতকে ক্ষমা চাইতে হবে : মওদুদীপুত্র

স্টাফ রিপোর্টার: ৭১’র খুন, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী নৃশংস কর্মকাণ্ডের জন্য বাংলাদেশের উগ্র ধর্মবাদী দল জামায়াতে ইসলামীকে অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পরামর্শ দিয়েছেন খোদ পাকিস্তানে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা মাও. আবুল আলা মওদুদীরপুত্র সাইয়্যেদ হায়দার ফারুক মওদুদী। গতকাল রোববার বেলা ১১টায় তিনি ঢাকায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতাদের সাথে এক বৈঠক করেন। তিনি চান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিচার করা হোক। আর এ বিচার কাজে তিনি তার সাধ্যমতো সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন।

মওদুদীপুত্র সাইয়্যেদ হায়দার ফারুক মওদুদী পাকিস্তানের বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও কলাম লেখক হিসেবে পরিচিত। রোববার সাইয়্যেদ হায়দার ফারুক মওদুদী একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পরিদর্শন করেন। মওদুদীপুত্রের সাথে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির, সহসভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, আইন বিষয়ক সম্পাদক ড. তুরিন আফরোজ ও কেন্দ্রীয় কমিটর সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম।

বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী দল ধর্মের নামে যে সন্ত্রাসী রাজনীতি চালাচ্ছে তার কঠোর সমালোচনা করেন হায়দার ফারুক মুওদুদী। নির্মূল কমিটির কার্যক্রমেও পাকিস্তান থেকে তিনি সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তার ব্যক্তিগত পাঠাগারে তার পিতা আবুল আলা মওদুদীর রচনাবলী এবং জামায়াতের বিভিন্ন প্রকাশনীর বিপুল সংগ্রহ রয়েছে। দল হিসেবে গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর ব্যাপারে তিনি সেগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরবরাহ করবেন।

হায়দার ফারুক আরও বলেছেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং ইসলামের অপব্যবহারের জন্য দল হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধকরণের আন্দোলনে আমাদের আরও সোচ্চার হতে হবে। তিনি আরও বলেন, জারজ সন্তানের যেমন পৈত্রিক সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার থাকতে পারে না তেমনি বাংলাদেশেও জামায়াতের রাজনীতি করার কোনো নৈতিক বা সাংবিধানিক অধিকার থাকতে পারে না। জামায়াত যদি ৭১’র কর্মকাণ্ডের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাহলেই কেবল তাদের ক্ষমা করার বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীকে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন সন্ত্রাসের রাজনীতি ছেড়ে মানুষের সেবামূলককাজে নিজেদের নিয়োজিত করতে, যাতে আখেরাতে তাদের গুণাহ মাফ হয়। রাজনীতি করা ছাড়াও মানুষের সেবা করার বহু পথ আছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।