চুয়াডাঙ্গায় তীব্র দাবদহে জনজীবন বিপর্যস্থ

 

স্টাফ রিপোর্টার: তীব্র তাপ্রপ্রবাহে জনজীবন অতিষ্ট। চারিদিকে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। কিন্তু সেই প্রতীক্ষা সহজেই পূরণ হচ্ছে না। বিশেষ করে ঢাকাবাসীকে বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করতে হবে কমপক্ষে শনিবার পর্যন্ত! চুয়াডাঙ্গায় মাঝে মাঝে আকাশ মেঘলা হলেও বৃষ্টি হচ্ছে না।

তীব্র দাবদহে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। এতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিদ্যুতের লোডশেডিং দাবদহকে আরো তীব্র করে তুলেছে। বিগত কয়েকদিনে অসহনীয় গরমে মানুষ প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না। এদিকে তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে শিশু-বৃদ্ধ সকলেই লেবুর সরবত ও ডাব-শসা খেয়ে জীবন ধারণ করছে। বিশেষ করে শিশু ও দিন-মজুর শ্রেণির মানুষেরা বেশি বিপাকে পড়েছে। তীব্র গরমের কারণে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে লোডশেডিংয়ের কারণে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে চলেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গরমের কারণে বেচাকেনা চরমাকারে কমে গেছে। কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ীদেরও একই অভিযোগ। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারের মুদি ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, আসহ্য গরমে ঠিকায় মুশকিল। বিশেষ করে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ফলে শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বড়বাজার মুন মার্কেটের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী হাসান আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে দোকানে বেচাবিক্রি কমে গেছে। গরমে ক্রেতারা বের হচ্ছে না। দিনমজুর কেদারগঞ্জের মোহাম্মদ বাবু বলেন, অসহ্য গরমে তারা কাজ করতে পারছে না। এতে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. আসাদুর রহমান মালিক জানান, এসময়ে পচাবাসি খাবার খাওয়া যাবে না। ফ্রেস ও তরল খাবার খেতে হবে। ফলের জুস খাওয়া যাবে। তবে, রাস্তার পাশে দোকানের জুস খাওয়া যাবে না। বেশি করে পানি খেতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পরিমাণ ছিলো ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। আদ্রতার পরিমাণ বেশি হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে।

আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, একদিকে অনলবর্ষী সূর্ষের তীব্র দাবদাহ অন্যদিকে বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং’ থেকে রক্ষা পেতে আলমডাঙ্গা পৌর কাউন্সিলররা ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলীর সাথে মতবিনিময় করেছে।  তীব্র দাবদহ ও বিদ্যুতের সীমাহীন লোডশেডিং’র অসহ্য যন্ত্রণায় মানুষের নাভিশ্বাস অবস্থা। এ যন্ত্রাণা থেকে মুক্তি পেতে আলমডাঙ্গা শহরের মানুষ বিদ্যুত বিভাগের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান মারমুখি হয়ে উঠা মানুষের অবাঞ্ছিত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ যাতে না ঘটে সে জন্য বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর আবাসিক প্রকৌশলীর সাথে এ বৈঠক করেন।

আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণাঞ্চলে গরমে মানুষের অবস্থা কাহিল। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না কেউই। দিনের বেলা অনলবর্ষি সূর্যের কারণে বাসা-বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। ফলে অফিসগামি, সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সি শিশুরা গরম ও তীব্র দাবদহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিং নাভিশ্বাস অবস্থার সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় আলমডাঙ্গা শহরের মানুষ বিদ্যুত বিভাগের ওপর ক্ষোভে ফুঁসছে। এই ক্ষোভে ফুঁসে উঠা জনতা যাতে অতীতের মত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি না করে সে জন্য বেশ কয়েকজন কমিশনার গতকাল মঙ্গলবার ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলী আবেদ আলীর সাথে বৈঠক করেন। তারা যেকোনো মূল্যে আলমডাঙ্গা শহরে বিদ্যুত পরিস্থিতির উন্নতি দাবি করেন। গাফিলতির জন্য অতীতের মতো বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা হলে তার দায়ভার বিদ্যুত বিভাগকেই নিতে হবে বলে সতর্ক করে দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা পৌরসভার কাউন্সিলর সদর উদ্দীন ভোলা, জহুরুল ইসলাম স্বপন, আলাল আহমেদ, মতিয়ার রহমান ফারুক, আব্দুল গাফফার, জাহিদুল ইসলাম প্রমুখ।