চুয়াডাঙ্গার বড়শলুয়ায় নবজাতক শিশুর রহস্যজনক মৃত্যু : হত্যার অভিযোগ করলেন পিতা

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার বড়শলুয়া গ্রামে শাশুরী ও নানি শাশুরির পিতা-মাতার প্রতিহিংসার বলি হলেন এক নবজাতক শিশু। রহস্যজনক এ মৃত্যু মানতে নারাজ। নবজাতকের পিতা সেলিম করলেন পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ। ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে করা হয়েছে দাফন।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের বড়শলুয়া গ্রামের ছরকত আলীর ছেলে দিনমজুর সেলিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, বছর তিনেক আগে পারিবারিকভাবে আমি বিয়ে করি গ্রামের কাশেমের মেয়ে মরিয়ম ওরফে চুন্নির সাথে। বিয়ের পর থেকেই সামান্য বিষয়ে আমার শাশুড়ি সাজেদা বেগম ও আমার নানি শাশুড়ি গায়েপেতে বিবাদ সৃষ্টি করতো। আমার স্ত্রী ৩ মাসের অন্তঃস্বত্তা হলে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আমার বাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে চলে আসে। মান অভিমান ভুলে আমি তাকে ফিরিয়ে আনতে যায়। সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়ায় আমার শাশুড়ি ও নানি শাশুড়ি। এরই মাঝে মরিয়মের গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকে। আমি বিভিন্নভাবে খোঁজখবর নিতে থাকি এবং ২০ হাজার টাকা স্ত্রীর নিকট রেখে আসি। বিপদে আপদে খরচ করার জন্য। বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে আমাকে জানানোর জন্য মরিয়মকে বলে আসি। এরি মাঝে গতকাল শনিবার ভোরের দিকে মরিয়মের প্রসব বেদনা ওঠে। বিষয়টি আমাকে না জনিয়ে আমার শাশুড়ি এবং নানি শাশুড়ি মরিয়মকে বাড়িতেই রেখে দেয়। অবস্থা যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন সন্ধ্যা ৭টার দিকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেয়ার উদ্যোগ নেয়। পথিমধ্যে মরিয়ম মৃত কন্যাশিশুর জন্ম দেয়। আমাকে না জানিয়ে মৃত নবজাতকের তড়িঘড়ি করে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা চালায়। আমি লোক মারফত জানতে পেরে ছুটে আসি। এসে দেখি নবজাতকের একটি পা এবং একটি হাত দুমড়ানো মোচড়ানো। আমাকে না বলা এবং তড়িঘড়ি করে নবজাতকে সরিয়ে ফেলার বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে।

অপরদিকে আমার কন্যার মৃত্যুতে স্ত্রীর মনে এতোটুকু অনুতপ্তের ছোঁয়া পড়েনি। আমি নবজাতকের ময়নাতদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলতেই বেকে বসে সে। সেলিম অভিযোগ করে আরও বলেন, আমি গরিব দিনমজুর হওয়ায় আমার শাশুড়ি বিয়ের পর থেকে আমাকে কোনোভাবেই জামাই হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। গরিব হওয়াটায় আমার অপরাধের একমাত্র কারণ।

এদিকে সেলিমের শাশুড়ি সাজেদা বেগম ও শশুর আসাদুল জামাই সেলিমের অভিযোগ অশিকার করে বলেন, নবজাতকের সাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। আর বিয়ের পর থেকেই আমাদের মেয়েকে ঠিকমতো দেখভালো করতোনা সেলিম। এদিকে গতকালই রাত ১০টার দিকে ময়নাতদন্ত ছাড়াই নবজাতকের দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।