চুয়াডাঙ্গার গাড়াবাড়িয়ায় বাল্যবিয়ের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের গাড়াবাড়িয়ায় গ্রামে স্কুলপড়ুয়া তামিন্নুর আক্তার বৃষ্টির বিয়ের আয়োজন করা হয় গতকাল। বিয়ের এক পর্যায়ে খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান হস্তক্ষেপ করেন। কাজি সটকে পড়েন বলে স্থানীয়রা জানিয়ে বলেছেন, বিয়ে পড়ানোর এক পর্যায়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শেষ পর্বের আনুষ্ঠানিকতা ভেস্তে যায়। অবশ্য বিয়ে হওয়ার আগেই তা ভেস্তে গেছে বলে জানিয়েছেন কনের পিতা।
[ads1]

জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা পূর্ব নির্ধারিত বিয়ের প্যান্ডেল তৈরি, রান্নাবাড়া, কাজি ডাকা ,আত্মীয়স্বজন দাওয়াত দিয়ে বিয়ের সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার তোড়জোড় শুরু হয়। বরপক্ষের সকল লোকজনও কনের বাড়িতে হাজির হয়। এরই মাঝে তখনই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসাইনের নির্দেশে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান গাড়ি নিয়ে হাজির হন বিয়েবাড়ি। অপরদিকে শঙ্করচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান ও ৯নং ওয়ার্ড মেম্বার জিল্লুর রহমানও বাল্যবিয়ে বন্ধে নির্দেশ দেন এবং গ্রাম পুলিশকে ঘটনাস্থলে হাজির হতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিয়ে বাড়ি পৌঁছে খোঁজ করেন কাজিকে। এলাকাবাসী ও কনেপক্ষ জানান, কাজি ইছাহক পালিয়েছেন। সীমান্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত নাবালিকা তামিন্নুর আক্তার বৃষ্টি, তার পিতা আরিফ হোসেন ও মা ফাহিমা খাতুনকে এক জায়গায় করে বাল্যবিয়ের কুফল ব্যাখ্যা করেন এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। লেখাপড়ার চালিয়ে সাবালিকা হয়ে বিয়ে করলে তার সুফল কী তাও ব্যাখা করেন তিনি। সুফলের কথা জেনে কনের পিতা-মা অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দেয়া থেকে বিরত থাকতে সম্মত হন। সাবালিকা না হওয়া পর্যন্ত মেয়ে আর বিয়ে দিবে না বলেও অঙ্গীকার করেন। মেয়েকে আবারো স্কুলে পাঠাবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। একই সাথে বর মাখালডাঙ্গা গ্রামের মুনছার আলীর ছেলে একরামুল হক ও তার লোকজনকেও সতর্ক করে দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান বলেন, আমি সদর উপজেলার সকল ইউনিয়নে পর্যায়ক্রমে মানসম্মত শিক্ষা, বাল্যবিয়ের কুফল, বাল্যবিয়েরোধ, মাদকনিরোধ, যৌতুক প্রথার বিলুপ্তি বিষয়ে সুধীসমাবেশ ও সেমিনার করেছি। তারপরও সমাজের এসব কু-প্রথার দিকে ধাবিতদের ও যারা এসব কাজে সহায়তা করেন তাদের বিরুদ্ধে অন্দোলন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অব্যাহত থাকবে।