চাঁদাবাজ জানু গ্যাঙের সালেমিন ও ফাতেমা গ্রেফতার : চাঁদাবাজির কথা স্বীকার

রয়েল ডিলাক্সের মালিকের নিকট থেকে চাঁদা আদায়ের সময় হাজির চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের একদল গোয়েন্দা

 

 

স্টাফ রিপোর্টার: চাঁদা দাবি করে না পেয়ে রয়েল ডিলাক্সে ইট নিক্ষেপ করা সেই চাঁদাবাজ সালেমিন অবশেষে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে। চাঁদার টাকা পরিশোধের ফাঁদ পেতেই তাকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে। গতকাল সালেমিন চাঁদাবাজির কথা স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছে। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে দামুড়হুদা চারুলিয়ার ফাতেমা খাতুন নামের এক নারীকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

জানা গেছে, গত রোজার মধ্যে রয়েল ডিলাক্সের মালিক সালাউদ্দিনের নিকট মোবাইলফোনে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে চাঁদাবাজচক্র। চাঁদার টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে রয়েলের ঢাকাগামী কোচে ইট নিক্ষেপ করা হয়। খুনের হুমকি দিতে থাকে তারা। চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডাইরিও করা হয়। অপরদিকে চাঁদাবাজচক্র চাঁদা আদায়ের অপতৎপরতা অব্যাহত রাখে। এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন সালাউদ্দিনসহ তার ব্যবসায়ী পার্টনার। দরকষাকষি শুরু করেন। ১০ লাখ টাকার স্থলে ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। গতপরশু চাঁদার টাকা ভালাইপুর মোড়ের অদূরবর্তী কলাবাড়ি সড়কের সিরাজ কাটা মোড়ের নিকট চাঁদা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে চাঁদাবাজ সালেমিন (২৫)। পূর্ব থেকে ওত পেতে থাকা চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম সেখান থেকে হাতেনাতে তাকে আটক করে। গতকাল মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে সালেমিন ও তার সহযোগী চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা চারুলিয়ার ফাতেমা খাতুনকে হাজির করা হয়।

2nd

গ্রেফতারকৃত সালেমিন মেহেরপুর জেলা সদরের কাঁঠালপোতা গ্রামের হায়াত আলীর ছেলে। সে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার চাঁদাবাজ জানু ও আকরামের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিলো। জানু গ্যাং চাঁদা দাবি করে আর চাঁদার টাকা আদায়সহ বোমা বা ইট নিক্ষেপ করে এ সালেমিনই আতঙ্ক সৃস্টি করে আসছিলো বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, চাঁদাবাজ সালেমিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতারকৃত ফাতেমা খাতুন চারুলিয়া গ্রামের সেই চিহ্নিত চরমপন্থি রুহুলের স্ত্রী। ফাতেমার পূর্বের স্বামীর নাম বাবর আলী। জানু ও আকরাম গ্যাং চাঁদাবাজি করে ওই ফাতেমার নিকট গচ্ছিত রাখতো।

চারুলিয়ার রুহুল কয়েক মাস আগে জামিনে মুক্ত। তার সম্পর্কে পুলিশ অবশ্য গতকাল সাংবাদিকদের সামনে তেমন তথ্য প্রকাশ করেনি। জানু সম্পর্কে তথ্য দিতে গিয়ে পুলিশের তরফে জানানো হয়, গতপরশু যখন সালেমিন চাঁদা আদায়ের জন্য কলাবাড়ি-ভালাইপুর সড়কের নির্দিষ্ট স্থানে ছিলো, তখন ওই জানুও ছিলো। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সে সটকে পড়ে। গতকালই চাঁদাবাজি মামলা রুজু করা হয়। সালেমিন ও তার সহযোগী ফাতেমা খাতুনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সালেমিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে পুলিশ জানায়। পরে দুজনকেই আদালতের আদেশে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার অন্য সহযোগীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।