গাংনী হাসপাতাল চত্বরে জলাবদ্ধতা : উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার উদাসীনতা!

 

মাজেদুল হক মানিক: নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স তথা হাসপাতালের নামের সাথে এবার যুক্ত হয়েছে জলাবদ্ধতা। সামান্য বৃষ্টিতেই হাসপাতাল চত্বরে পানি জমে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ছেন রোগীসহ হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা। ড্রেনেজ রক্ষণাবেক্ষণ না করায় এই দুর্গতি বলে জানা গেছে। এর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অপুর্ব কুমার সাহাকে দায়ী করেছেন সংশ্লিষ্ঠরা। মাসের বেশিরভাগ সময় তিনি হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকায় হাসপাতালের বেহাল দশায় দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন হাসপাতালে কর্মরত অনেকেই।

গাংনী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন জানান, গত ১০ জুলাই সকাল থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত একটানা ঝড় বৃষ্টিতে জনদুভোর্গ সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা অর্থাত ড্রেনেজ পরিস্কার না করায় হাসপাতাল চত্বরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। কখনো হাটু পানি আবার কখানো এর নীচে অবস্থান করলেও যাতায়তের চরম সমস্যা সৃষ্টি হয়। হাসপাতালের প্রধান ভবন থেকে পার্শ্ববর্তী নিপোর্ট সেন্টারে রোগী স্থানান্তর জলাবদ্ধতার কারণে বিঘ্ন ঘটে। এছাড়াও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা পড়েন চরম বিপাকে। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছেন হাসপাতালে আসা নারী ও শিশুরা।

জলাবদ্ধতার কারণে কর্মরত ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা বিপাকে পড়লেও অসহায়ের মতো শুধু দেখা ছাড়া কিছুই করার নয়। কেননা জলাবদ্ধাতার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা. অপুর্ব কুমার সাহাকে দায়ী করেছেন তারা। চলতি মাসের শুরু থেকে কয়েকদিন ছুটি নিয়ে তিনি বাইরে গেলেও ছুটি শেষেও নিয়মিত অফিস করছেন না। এ হাসপাতালে তিনি যোগদানের পর থেকেই কোন এক অদৃশ্য শক্তির বলে কোন কিছুই পরোয়া করেন না। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রতিদিনের নির্ধারিত কর্মকালীন সময়ের পরে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে অবস্থান করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু তিনি সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি বর্ষা মরসুমে বৃষ্টিপাত তেমন না হলেও যেটুকু হচ্ছে তাতে মাঝেমধ্যেই হাসপাতাল চত্বরের বেশিরভাগ জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেও একই অবস্থা। এতে হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে এসেছে। পানি ডিঙিয়ে বাইরে যাওয়া আসা করতে ইস্ততত বোধ করছেন এখানে কর্মরতরা। এছাড়াও রোগী আনা নেয়া ও ওষুধ কিনতে যাওয়ায় বেগ পেতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের।

হাসপাতাল ভবনের সাথে রয়েছে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে এর রক্ষাণাবেক্ষণ না হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে। প্রতি বছর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মোটা অঙ্কের অর্থ এ কাজে ব্যয় করলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন চোখে পড়েনি কারো। তাই এ কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ নেই নাকি বরাদ্দ অন্য কোনোভাবে কেউ পকেটস্থ করছে সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।

এদিকে প্রতি মাসের বেশিরভাগ সময় হাসপাতালের বাইরে অবস্থান করেন ডা. অপুর্ব কুমার সাহা। হাসপাতালের প্রতি তিনি উদাসীন বলে জানান তার অধীনস্থ কয়েকজন। এ কারণে হাসপাতালে নানাবিধ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর সাথে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে জলাবদ্ধতা। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য তারা সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকতার মোবাইলফোনে কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।