গাংনীর রংমহল সীমান্তে দু দেশের মানুষের মিলনমেলা

সীমান্ত থেকে ফিরে মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার খাসমহল সীমান্তে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হয়ে গেলো দু বাংলার মানুষের মিলনমেলা। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে সীমান্তের কাটাতারের বেড়ার এপারে-ওপারে জড়ো হয়েছিলো দু দেশের হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন পরে হলেও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে দেখা করতে পেরে বেজায় খুশি দু বাংলার মানুষ।

১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে অনেকেই স্বজন রেখে চলে আসেন বাংলাদেশে আবার কেউ চলে যান ভারতে। কারও পিতা-মাতা আবার কারও চাচা, মামাসহ নিকটাত্মীয়রা রয়ে গেছেন দু দেশে। এপার বাংলা ওপার বাংলার ভাষা এক সংস্কৃতিও এক। কাঁটাতারের বেড়া বাংলাদেশ-ভারতের ভৌগলিক সীমানা ভাগ করলেও মায়ার টানে সীমান্তে ছুটে এসেছেন বলে জানালেন চৌগাছা গ্রামের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। তিনি আরো জানান, ভিসা করে সবার পক্ষে দেখা সাক্ষাত করা সম্ভব ছিলো না। তাইতো দীর্ঘদিন বিছিন্ন থাকা স্বজনদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেয়ায় দু দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান দর্শনার্থীরা।

Gangni border Eid festival pic_(4)

ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতেই হাজারো মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন সীমান্তে। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ১৩৮ নং মেন পিলার এলাকার কাঁটাতারের বেড়ার দু পাশে বাংলাদেশ-ভারতের হাজারো মানুষ স্বজনদের সাথে সাক্ষাত করেন। দীর্ঘদিন পরে কাছের মানুষদের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকেই। তবে বিএসএফ সদস্যরা কয়েক দফা লাঠিপেটা করে দর্শনার্থীদের ওপর। এতে উত্তেজনাও সৃষ্টি হয়।

কুষ্টিয়ার কুমারখালীর শিলা রাণী ভারতের মুরুটিয়া থাকা পিতা নরেন বিশ্বাসের সাথে দেখা করেছেন। এ সময় পিতা মেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ভারতের নদীয়া জেলার বাঁশবাড়িয়া চাচাতো ভাই ফজলু মিয়ার সাথে সাক্ষাতের পাশাপাশি কোরবানির মাংসসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী বিনিময় করেন গাংনীর খাস মহল গ্রামের বিপ্লব হোসেন।

এ মিলন মেলার মধ্যদিয়ে সীমান্তে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বছরের দুটি ঈদে মিলনমেলার আয়োজনের দাবি জানালেন দর্শনার্থী গাংনী প্রিক্যাডেটের শিক্ষক আসাদুজ্জামানসহ দর্শনার্থীরা।