গাংনীর ঢেপা গ্রামে অগ্নিসংযোগ ॥ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনীর ঢেপা গ্রামের আসাদুর রহমান হারুর বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পুর্ব বিরোধের জের ধরে সোমবার রাতে গ্রামের একটি পক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
অভিযোগে জানা গেছে, ঢেপা গ্রামে বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কয়েকদিন আগে সংঘর্ষ বাঁধে। এর জের ধরে সোমবার রাতে আসাদুর রহমান হারুর বাড়িতে একদল লোক রামদা ও লাঠিসোটা নিয়ে প্রবেশ করে। হারুর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ করে বলেছে, ঘটনার সময় হারু মিয়া মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হামলাকারীরা হারুকে খুঁজে না পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং রামদা দিয়ে বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় কোপাতে থাকে। এসময় হারুর মেয়ে ও ছেলের স্ত্রী ভয়ে চিৎকার দেয়। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা হারুর একটি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভায়। এ ঘটনায় হারু মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে গাংনী থানায় মামলা দায়েরের উদ্দেশে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গেলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় থেকে গ্রামের দু’পক্ষের মধ্যে বড় ধরনের বিরোধ শুরু হয়। যা আজও বিদ্যমান। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছোট ছোট গ-গোলের পর কয়েকদিন আগে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিরোধের শুরু থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত উভয় পক্ষ জড়িয়ে পড়েছে মামলা ও পাল্টা মামলায়। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রেফতার আতঙ্কে উভয়পক্ষের অনেক পুরুষ রাতে নিজ বাড়িতে থাকছে না। অন্যত্র পালিয়ে থাকায় গ্রাম হয়ে পড়ছে অরক্ষিত। এর মধ্য দিয়ে তৃতীয়পক্ষ সুবিধা নেয়ার অপচেষ্টাও করছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। গ্রামের দু’পক্ষের লোকজনের মধ্যে বিরোধ এতোটাই চাঙ্গা দিয়ে উঠেছে যে, কেউ কারও মুখ দেখতে চাইছেন না। প্রতিপক্ষের বাড়ির আশেপাশেও চলাচলে সীমাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। সম্ভাব্য হামলা ও সংঘর্ষের আশঙ্কায় উভয়পক্ষের লোকজনের স্বাভাবিক চলাফেরা ও কাজকর্মে ভাটা পড়েছে। প্রতিপক্ষের হামলার আশঙ্কায় সঙ্ঘবদ্ধভাবে চলাফেরা করছে দু’পক্ষের লোকজন। তাই যেকোনো মুর্হূতে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এসব ঘটনায় প্রাণহানিও হতে পারে বলেও গ্রামের মানুষের মাঝে গুঞ্জন উঠেছে। গ্রামের অনেক বয়োবৃদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছেন, এই গ্রামে মার্ডার না হওয়া পর্যন্ত উত্তেজনা থামবে না।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। তবে ক্ষমতাসীন দলসহ এলাকার সকলের সহযোগিতা থাকলে দ্রুত এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে প্রত্যশা ব্যক্ত করেন তিনি।