গাংনীতে মধ্যরাতে বিধবার ঘরে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি ॥ প্রতিবাদের ঝড়

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার কুমারীডাঙ্গা গ্রামের এক বিধবার ঘরে গিয়ে গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন সিন্দুকৌটা গ্রামের কামাল হোসেন। প্রতিবেশীরা দু জনকে একই ঘরে দরজাবন্দি করলেও কৌশলে পালিয়েছে কামাল হোসেন। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চলছে তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড়।
কামাল হোসেন সিন্দুকৌটা গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কুমারীডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদ সভাপতি। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমারীডাঙ্গা গ্রামের দু কন্যা সন্তানের জননী বিধবা এক নারীর বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরেই যাওয়া-আসা ছিলো কামাল হোসেনের। রোববার গভীর রাতে কামাল হোসেন ওই নারীর বাড়িতে যান। এক পর্যায়ে নারীর শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। বিষয়টি টের পেয়ে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। কয়েকজন চুপিসারে ঘরের দরজার শিকল এঁটে দেন। গ্রামের লোকজনের জড়ো করার চেষ্টা করেন বিধবার প্রতিবেশীরা। উপস্থিত লোকজন বাড়ির চারদিকে অবস্থান নেন। বিষয়টি টের পেয়ে ঘরের অন্য পাশ দিয়ে বের হয়ে পালিয়ে যায় কামাল হোসেন।
এদিকে ঘটনার রাত থেকেই কামাল ও বিধবা নারীকে নিয়ে মুখরোচক আলোচনা চলছে এলাকাজুড়ে। মধ্যরাতে কামাল হোসেন ওই বাড়িতে কেনো গিয়েছিলেন? এ নিয়ে গ্রামে চলছে নানা গুঞ্জন। মধ্যরাতে বিধবার ঘরে ওঠা একজন ব্যক্তি কীভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের সভাপতি তা অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে। বিরাজ করছে প্রতিবাদের ঝড়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসকসহ শিক্ষা অফিসের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
জানতে চাইলে ওই নারী গতকাল সোমবার সকালে সাংবাকিদের বলেন, আমার ভাসুরদের সাথে জমিজমা ও অর্থ সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। তাদের রোষানল থেকে রেহাই পেতে কামালের আশ্রয় নেয়। কামালের ওপরে এ এলাকায় কেউ কথা বলে না। তাকে সবাই ভয় পায়। কামাল হোসেন আমাদেরকে দেখাশোনা করেন। বিপদে-আপদে পাশে থাকেন। তার সাথে আমার অবৈধ কোনো সম্পর্ক নেই। তাহলে তিনি মধ্যরাতে কী কাজে এসেছিলেন এমন প্রশ্নের উত্তর দেননি ওই বিধবা।
ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে কামাল হোসেন বলেন, সবই ষড়যন্ত্র। স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, কামাল হোসেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। সিন্দুরকৌটা মরা নদী লিজের মাধ্যমে মাছ চাষ করেন। মাছ চাষের মধ্যদিয়ে সে মাছ কামাল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। মাছ পাহারা দেয়ার জন্য তার নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। যাদের সাথে রাতে অবস্থান করেন কামাল। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কয়েজন নেতার সাথে রয়েছে কামালে গভীর সখ্যতা। যার সুবাদে কামালের লোকজন পেয়েছেন নদীতে মাছ চাষের সুযোগ। কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও ভুক্তভোগী কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননা। শুধুমাত্র পেশিশক্তির কারণেই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদের কমিটি গঠনে কেউ প্রতিবাদ করেনি। নির্বিঘ্নে কামাল হোসেন সভাপতির আসনে বসেছেন। দায়িত্ব নিয়েই তিনি একজন সহকারী শিক্ষককে মারধর করেন। প্রাণভয়ে ওই শিক্ষক অভিযোগ করেননি বলে বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।