খোশ আমদেদ মাহে রমজান

 

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউসুফ আলী: আজ ৮ রমজান। পবিত্র মাহে রমজানের রহমত দশকের অষ্টম দিন। এ মাস সবর, ধৈর্য, সহানুভূতি ও সহমমির্তার। এ মাস আমাদেরকে অপরের প্রতি দয়া করার শিক্ষা দেয়। হাদিসে এ মাসে অধীনস্ত কর্মচারী, চাকর-নকরদের ওপর থেকে কাজের বোঝা হালকা করার কথা বলা হয়েছে। এতে অনেক ছওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। এক দীর্ঘ হাদিসে হুজুর (সা.) রমজান উপলক্ষে সাহাবিদের উদ্দেশে ভাষণ দানকালে বলেন,হে মানবমণ্ডলি! তোমাদের প্রতি ছায়া স্বরূপ এসেছে এক মোবারক মাস, যাতে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস হতেও উত্তম।আল্লাহতায়ালা রোজাকে তোমাদের জন্য ফরজ করেছেন এবং তারাবির নামাজকে সুন্নত করেছেন। যে ব্যক্তি এ মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একটি নফল আদায় করলো সে যেন অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করলো। আর যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরজ আদায় করলো সে যেন অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করলো। এটি সবরের মাস আর সবরের বিনিময়ে জান্নাত রয়েছে। এ মাস সহানুভূতি প্রদর্শনের। এ মাসে মুমিনের রিজিক বৃদ্ধি করা হয়। যে এ মাসে কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, এটা তার জন্য গোনাহ মাফ এবং দোজখের আগুন হতে মুক্তির কারণ হবে। এছাড়া ইফতার করানোর কারণে সে রোজাদারের সমান ছওয়াব লাভ করবে, যদিও তার ছওয়াব কম করা হবে না। সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করলেন, আমাদের প্রত্যেকে তো এ সামর্থ রাখে না যে রোজাদারকে পরিপূর্ণভাবে ইফতার করাবে?হুজুর (সা.) এরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা এ ছওয়াব দান করবেন যদিও সে কোনো রোজাদারকে ইফতার করায় একটি খেজুর, এক ঢোক পানি অথবা এক চুমুক দুধ দ্বারা। আর যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে তৃপ্তি সহকারে আহার করাবে তাকে আল্লাহতায়ালা আমার হাউজে কাওছার হতে এমন পানি পান করাবেন যাতে জান্নাতে প্রবেশের পূর্ব পর্যন্ত আর কোনো পিপাসা লাগবে না। এমন মাস যার প্রথম দিকে রহমত, মধ্যভাগে মাগফেরাত এবং শেষ দিকে জাহান্নাম হতে নাজাত রয়েছে। যে এ মাসে দাস দাসীদের ওপর কাজের ভার লাঘব করে দেবে আল্লাহপাক তাকে মাফ করে দেবেন এবং দোজখ হতে মুক্তি দেবেন (বায়হাকি শো’আবুল ঈমান, ইবনে হিব্বান, তারগিব)। তাই আসুন, আমরা এ মাসে রোজাদেরকে ইফতার করাই, অধীনস্ত কর্মচারী, খাদেমদের ওপর কাজের বোঝা হালকা করে দিই এবং অপরের প্রতি সাহায্য-সহযোগিতা ও সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিই এবং আল্লাহর মাগফেরাত লাভ করি।(লেখক: অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)