খেয়াল খুশিমতো নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না

স্টাফ রিপোর্টার: শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশে কারো খেয়ালখুশি মতো নির্বাচন মেনে নেয়া হবে না, এ দেশের মানুষ মানবে না। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ চাই। সব দল অংশগ্রহণ না করলে সেই নির্বাচন আমরা মানবো না। ঈদের পরদিন গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর লেডিস ক্লাবে শিক্ষা, শিল্প-সাহিত্য ও সমাজকর্মে উদ্যোগী নারী, সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

গ্রামীণ ব্যাংককে কেন্দ্রীয় সরকারের নজরদারিতে আনার সরকারি উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করে এ প্রতিষ্ঠানে যেকোনো হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। গ্রামীণ ব্যাংক রক্ষায় উপস্থিত নারীদের হাত তুলে সমর্থন দেয়ার আহবান জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আপনাদের ব্যাংক রক্ষায় আপনাদেরই সোচ্চার হতে হবে। আপনাদের চেঁচিয়ে বলতে হবে, খবরদার! গ্রামীণ ব্যাংকে হাত দেবেন না। যে হাত দেবেন, তার হাত ভেঙে দেবো। তিনি বলেন, এ দেশে আমরা বানের পানিতে ভেসে আসি নাই। স্থানীয় সংগঠন নোবেল বিজয়ী সুহূদ-চট্টগ্রাম আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চিটাগাং উইমেন চেম্বারের সভাপতি কামরুন্নাহার মালেক। বক্তব্য রাখেন ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান, স্থপতি জেরিনা হোসাইন, অধ্যাপিকা আনোয়ারা আলম, লেখিকা রুনু সিদ্দিকী, শিল্পী ও ডিজাইনার আইভি হাসান প্রমুখ।

ড. ইউনূস বলেন, ২৫ অক্টোবরকে ঘিরে দেশজুড়ে জনগণের মধ্যে ভয়-আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যত নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দেশের মানুষ চায় শান্তি ও নিরাপত্তা। অনিয়ম বিশৃঙ্খলা ও কারো খেয়াল-খুশির কারণে জাতীয় জীবনে দুর্যোগ আসুক তা মানুষ চায় না। ড. ইউনূস বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক গরিবের হক। এ ব্যাংক গরিবদের জন্য বানানো হয়েছে। কোনো সরকারের কাছে বেচে দেয়ার জন্য এ ব্যাংক তৈরি হয়নি।

তিনি গ্রামীণ ব্যাংক তৈরির ক্ষেত্রে চট্টগ্রামে প্রথম কর্মযজ্ঞের বর্ণনা দিয়ে বলেন, এ ব্যাংকের মডেল আজ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। যারা এ ব্যাংক কেড়ে নিতে চায় তারা মারমুখি হয়ে উঠেছে। অপপ্রচার চালাচ্ছে। মুখে যা খুশি তাই বলছে। তারা আমাকে সুদখোর-ঘুষখোর আখ্যায়িত করেছে। গ্রামীণ ব্যাংকে পঁচিশ হাজার মানুষ চাকরি করে, কেউ এক পয়সা ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছে এ রকম নজির কেউ দেখাতে পারবে না।

ড. ইউনূস সরকারি বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, সরকারি ব্যাংকে সুদের হার ২৭ শতাংশ, আর গ্রামীণ ব্যাংকের সুদের হার ২০ শতাংশ। গ্রামীণ ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তুলে তদন্ত কমিশন করেছে তারা, সেই কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো রিপোর্টই দিতে পারছে না। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের ওপর যেকোনো অশুভ চক্রান্ত এ ব্যাংকের মালিক নারীরাই রুখে দেবে।