খালেদা জিয়ার জেল হলে সরকার পতনের আন্দোলন

বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত : পাশাপাশি চলবে আইনি লড়াইও

স্টাফ রিপোর্টার: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড হলে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের পাশাপাশি আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ৮ ফেব্রুয়ারির রায়ে ‘সুবিচার’  না পেলে সরকার পতনের একদফা আন্দোলনের পথে নামতে চায় দলটি। জরুরি পরামর্শ ও দিক নির্দেশনার জন্য ২০১১ সালের পর ডাকা হচ্ছে জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক। ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ বৈঠক হবে। আজ রোববার ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১ ফেব্রুয়ারি আবারও হবে স্থায়ী কমিটির বৈঠক।

গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে বেগম জিয়ার বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। রায় বিপক্ষে যাবে এটা ধরে নিয়ে পরবর্তী করণীয় বিষয়ে মূলত আলোচনা হয় বৈঠকে। বেগম জিয়া জেলে গেলে কিভাবে কর্মসূচি ও দল পরিচালনা করতে হবে তা আলোচনায় স্থান পায়। হরতালসহ টানা কর্মসূচি দিয়ে সারাদেশের নেতাকর্মীদের রাজপথে আনার পরামর্শ দেন সদস্যরা।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, অধিকাংশ নেতা চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করার জন্য বেগম জিয়াকে পরামর্শ দেন। তারা বলেন, সরকারকে আর সুযোগ দেয়া যাবে না। একজন নেতা  বলেন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠক ডেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের পরামর্শ নিয়ে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করবেন দলীয় প্রধান। এটা নির্বাচনের বছর। নেতাকর্মীরা ডাক পেলে রাস্তায় নেমে আসবে। বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বৈঠক শুরুর কিছুক্ষণ পর বেরিয়ে এসে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে জাতি উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ। এছাড়া খালেদা জিয়াসহ কয়েকজন নিরাপরাধ ব্যক্তিকে মিথ্যা, বানোয়াট ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা নিয়ে সরকারের আইন ও আদালতের নিয়ম-নীতির আচরণের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়া উচিত। নিরপেক্ষ নির্বাচন বন্ধ করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে।

মির্জা ফখরুল জানান, হঠাত করেই খালেদা জিয়ার রায় ঘোষণা করার বিষয়টি শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, রহস্যজনকও। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার জন্য দ্রুত রায় ঘোষণা সরকারের অপচেষ্টার অংশ। তিনি আরও জানান, জাল-জালিয়াতি করে বিচারের নামে প্রহসন এবং বিরোধী দলকে দমন করতেই আদালতকে ব্যবহার করার আরেকটি নোংরা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হতে যাচ্ছে। বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে জাতি উদ্বিগ্ন, ক্ষুব্ধ ও ক্রদ্ধ। কর্মসূচির বিষয়ে ফখরুল বলেন, আগে রায় আসুক, তারপর এ বিষয়ে পরে বলবো।