কোটচাঁদপুরে এক এএসআই’র অমানবিক নির্যাতনে হাসপাতালের বেডে অকাতরে কাতরাচ্ছে কৃষক

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: গত মঙ্গলবার রাত নয়টা। প্রচুর লোকজন কোটচাঁদপুর হাসপাতালের ইর্মাজেন্সির সামনে। এ দেখে আমি (প্রতিবেদক) সেখানে হাজির হওয়া মাত্র লোকজন আমাকে দেখে বলতে লাগলো সাংবাদিক ভাই দেখে যান পুলিশ কিভাবে একজন মানুষকে পিটিয়ে জখম করেছে। ওরা মানুষ না…..। ওয়ার্ড়ে গিয়ে দেখা গেলো আসলেই হাসপাতালের বেডে পুলিশের এলোপাতাড়ি লাঠির আঘাতে প্রায় অচেতন অবস্থায় কাতরাচ্ছে এক ব্যক্তি। এ সময় অনেককেই এ অবস্থা দেখে পুলিশকে তিরস্কার করতে করতে স্থান ত্যাগ করতে দেখা গেলো। কেন এমন হলো, বিষয়টা কি? জানতে চাইলে- আহত ব্যক্তির সাথে থাকা লোকজন এ প্রতিবেদককে জানান, উপজেলার গুড়পাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই সঞ্জয় কুমার হঠাৎ করে সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মৃত দুখু বিশ্বাসের ছেলে কৃষক ইসরাইলকে গুড়পাড়া বাজার থেকে ধরে ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এরপর তাকে বেঁধে এলোপাতাড়িভাবে পিটিয়ে আহত করে ফেলে রাখে। পরে ইসরাইলের অবস্থা খারাপ দেখে এলাকার কয়েকজনের হাতে তুলে দিয়ে চিকিৎসা করতে বলেন ওই এএসআই। এরপর ইসরাইলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ইসরাইলের বড় ভাই মুক্তার হোসেন বলেন, প্রথম স্ত্রী ফনু বেগমের সাথে ইসরাইলের সামান্য বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হওয়ার পর ইসরাইল গ্রামের বাজারে চলে আসে। এ সময় ইসরাইলের স্ত্রী ফনু বেগম গুড়পাড়া ফাঁড়িতে এসে এএসআই সঞ্জয়ের কাছে স্বামী ইসরাইলের  বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ করে। এ অভিযোগ পেয়ে এএসআই সঞ্জয় অতি উৎসাহী হয়ে বাজার থেকে ইসরাইলকে ধরে ফাঁড়িতে বেঁধে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। ইসরাইলের দ্বিতীয় স্ত্রী নার্গিস বেগম ও ভাইজি লাকী খাতুন জানান, বাড়িতে ইসরাইলের সাথে তার প্রথম স্ত্রীর তেমন কোনো গোলযোগ হয়নি। তবুও এ সমান্য ব্যাপারে এএসআই সঞ্জয় কুমারের এমন নিষ্ঠুর পাষণ্ডতা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। বিষয়টি জানতে ওই রাতেই গুড়পাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ এএসআই সঞ্জয় কুমারের কাছে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়েই লাইন কেটে দিয়ে মোবাইলফোন বন্ধ করে রাখেন। রাত সাড়ে নয়টার দিকে থানার ওসি শাহিনুর রহমান শাহিনের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, ওই এএসআই বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে ওই রাতের মধ্যেই ফাঁড়ি থেকে এএসআই সঞ্জয় কুমারকে ক্লোজড করে ঝিনাইদহ পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।