কেরু চত্বরে অবৈধভাবে বালু তোলায় ঝুঁকিতে বহু স্থাপনা

 

স্টাফ রিপোর্টার: দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চত্বরের দুটি পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে আশপাশের বেশকয়েকটি স্থাপনা। রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকল কেরু অ্যান্ড কোম্পানি চত্বরের দুটি পুকুর থেকে এক মাস ধরে চলছে অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন। এতে করে ঝুঁকিতে রয়েছে আশপাশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

চুয়াডাঙ্গা দর্শনার কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের পরিদর্শন বাংলোর বিপরীতে অবস্থিত পুকুর দুটি থেকে বালু উত্তোলন করছেন আব্দুল জলিল নামের স্থানীয় এক বালু ব্যবসায়ী। তিনি কেরু অ্যান্ড কোম্পানির সাথে যোগসাজশ করে বালু তোলার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে প্রায় ৩ হাজার ট্রাক বালু তোলা হয়েছে ওই পুকুর থেকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শ্যালোইঞ্জিনচালিত খননযন্ত্র (ড্রেজার মেশিন) দিয়ে পুকুর থেকে বালু উত্তোলন চলছে। পাশেই রয়েছে বালুর বিশাল স্তুপ। একের পর এক ট্রলিতে করে বালু অন্যত্র নেয়া হচ্ছে। উত্তোলিত বালুর একাংশ দিয়ে কেরুর প্রধান ফটকের পাশের একটি ছোট পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদরের কাথুলী গ্রামের তিনজন শ্রমিক পুরো প্রক্রিয়া তদারকি করছেন। তারা জানান, বালু ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল তাদের নিযুক্ত করেছেন।

বালু উত্তোলনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, কেরু কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সাথে সমঝোতা করেই তিনি বালু তুলছেন। এ বিষয়ে একটি মৌখিক চুক্তিও হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী পুকুর দুটি থেকে ১ হাজার ট্রাক বালু তুলে কোম্পানির ছোট পুকুরটি ভরাট করা হবে। আর উত্তোলন খরচ বাবদ তিনি নেবেন ২ হাজার ট্রাক বালু। সে অনুযায়ীই চলছে উত্তোলন কাজ।

বালু ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমানের সাথে মৌখিক চুক্তির কথা স্বীকার করেন কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের এমডি এবিএম আরশাদ হোসেন। তিনি বলেন, একটি মহৎ উদ্দেশ্য সামনে রেখে পরিত্যক্ত পুকুর দুটি খননের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে হিসেবে প্রতিটি পুকুর ছয় ফুট গভীর করে খননের কথা। তবে খননযন্ত্র দিয়ে গভীর থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেই।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা আছে, সেতু, কালভার্ট, সড়ক, মহাসড়ক, রেলপথসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা অথবা আবাসিক এলাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে বালু ও মাটি উত্তোলন করা যাবে না। অথচ, যে পুকুর দুটি থেকে বালু তোলা হচ্ছে, তার ১ কিলোমিটারের মধ্যে এগুলোর সবই রয়েছে। অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় বিশেষ করে কেরু চত্বরের পরিদর্শন বাংলো, শ্রমিক-কর্মচারী কলোনি, অভ্যন্তরীণ কয়েকটি রাস্তার জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কেরুর এমডি আরশাদ বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মতিতেই পুকুরগুলো খনন করা হচ্ছে। নিজেরা করলে অন্তত ৮/৯ লাখ টাকা লাগত। সেখানে বিনা খরচে খনন করে কোনো অন্যায় করা হয়নি।