কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচন : ভোল পাল্টাতে শুরু করেছেন নেতারা

ফারুক ও তৈয়ব এক কাতারে দাড়ানোর পর এখন জোট বেধেছেন হাফিজ মোস্তাফিজ ও সবুজ

 

দর্শনা অফিস: কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের নির্বাচন মানেই চমকের ওপর চমক। প্রার্থী ও ভোটারের মধ্যে মুহূর্তে মুহূর্তে পাল্টায় মনোভাব। কখন কে কার পক্ষের তা বুঝতে অনেকটাই হিমসিম খেতে হয়। সাবেক সহসভাপতি দু’বারের সভাপতি প্রার্থী ফারুক আহম্মেদ সংগঠন গুটিয়ে সভাপতি প্রার্থী তৈয়ব আলীর হাতেহাত দিয়ে তাকে সমর্থন করার কয়েক দিনের মাথায় নতুন চমকের কথা শোনা যাচ্ছে। সাবেক সভাপতি এ নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, সভাপতি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও কয়েকবারের নির্বাচিত সভাপতি চাকরিচ্যুত আজিজুল হকের ছেলে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে নতুন মুখ ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ দাঁড়িয়েছেন এক কাতারে। কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম শুধু কেরুজ আঙিনায় না। এ নির্বাচনের বাতাস গোটা জেলায় বইছে। দিনভর প্রার্থীদের মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, ভোটারের দ্বারে দ্বারে দোয়া, সমর্থন ও ভোট প্রার্থনার পর সন্ধ্যা থেকে স্বস্ব সংগঠন কার্যালয়ে শুরু হয় সভা-সমাবেশ। মিছিলের মধ্যদিয়ে শেষ করা হয় নির্বাচনী প্রচারভিযান। এরই মধ্যে ফারুক সংগঠনের কর্ণধর ফারুক আহম্মেদ নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ওপর সভাপতি প্রার্থী তৈয়ব আলীকে সমর্থন করেছেন। ফলে তিনি পদ পাল্টে তৈয়ব সংগঠনের পক্ষ থেকে সহসভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে কেরুজ আঙিনায় গুঞ্জন শোনা গেলেও ৩/৪ দিন থেকে অনেকটাই খোলসা হলো তিন নেতার এক কাতারে দাঁড়ানোর গুঞ্জন। প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর সূর্যসেনা শ্রমজীবী সংগঠনের সভাপতি, এবারের নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হাফিজুল ইসলাম, মোস্তাফিজুর সংগঠনের কর্ণধর সভাপতি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান ও সাবেক সভাপতি আজিজুল হকের ছেলে সভাপতি প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এক সাথে জোট বেধে বের করেছেন মিছিল। মিছিল শেষে করছেন সমাবেশ।

মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ৩ জানুয়ারি থেকে ৩ সভাপতি প্রার্থী হাফিজ, আমি নিজে ও সবুজ এক কাতারে দাঁড়িয়েছি। নিজেদের মধ্যে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে সমন্বয় করে নেবো। তবে কবে নাগাদ সভাপতি প্রার্থী সমন্বয় করা হবে তা সঠিকভাবে বলতে না পারলেও মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, সকলেরই ছাড় দেয়ার মানসিকতা রয়েছে। এখন দেখার অপেক্ষামাত্র ৩ নেতার মধ্যে কে হয় সভাপতি প্রার্থী। সভাপতি পদে দ্বিধা-বিভক্তি থাকলেও সাধারণ সম্পাদক বা অন্যান্য পদের ব্যাপারে নেই কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব। এবারের নির্বাচনে ইউনিয়নের ২৫টি পদের মধ্যে ২ নং ওয়ার্ড সদস্যপদে রমজান আলী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এ নির্বাচনে সভাপতি পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- তৈয়ব আলী (বাইসাইকেল), হাফিজুল ইসলাম (আনারস) মোস্তাফিজুর রহমান (ছাতা) ও ফিরোজ আহম্মেদ সবুজ (চশমা) প্রতীকে। সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ৩ জন প্রার্থী। এদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স (হারিকেন), সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ (চাঁদতারা) ও আতাউর রহমান (মই) প্রতীকে। সহসভাপতি পদে মাঠে রয়েছেন- ইদ্রিস আলী (মোমবাতি), জয়নাল আবেদীন (হাতি), জুলফিকার হায়দার (কলস), ফারুক আহম্মেদ (তালাচাবী), রেজাউল করিম (কাপপিরিচ) ও শফিকুল আলম (টেবিল)। সহসাধারণ সম্পাদক পদে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন, আতিয়ার রহমান (চেয়ার), আসাদুল হক ব্যাকা (বেলচা), আ. রব বাবু (দোয়াত কলম), আব্দুল হান্নান (মোরগ), ইসমাইল হোসেন (হাস), খবির উদ্দিন (মাছ), জয়নাল আবেদীন (তলোয়ার), নাসির উদ্দিন (হাতপাখা) ও বাবুল আক্তার (কলম)। ১১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১ নং ওয়ার্ডে আয়ুব আলী সন্টু (ডাব) ও সালাহউদ্দিন শাহ (বাল্ব)। ২ নং ওয়ার্ডে রমজান আলী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। ৩ নং ওয়ার্ডে সানোয়ার হোসেন (বালতি) ও সমির কুমার সরকার (ডাব)। ৪ নং ওয়ার্ডে আবুল কাশেম (বালতি), বাবর আলী (ডাব) ও বিল্লাল হোসেন (বেলচা) প্রতীক। ৫ নং ওয়ার্ডে আজিজুল হক (ডাব), বিল্লাল হোসেন (হাতুড়ি) মনিরুল ইসলাম (বালতি)। ৬ নং ওয়ার্ডে শ্রী গোবিন্দ কুমার হালদার (বালতি), মঈনউদ্দিন লিটন (বাল্ব), মজিবর রহমান (ডাব), রবিউল ইসলাম (হাতুড়ি), শামীম হোসেন (বেলচা) ও হাফিজুর রহমান (আখেরআটি)। ৭ নং ওয়ার্ডে আক্রাম আলী (কাঠাল), আমিনুল ইসলাম (হাতুড়ি), আরিফ (ডাব), মফিজুর রহমান (বেলচা), মামুন আহম্মেদ (আখের আটি), মোহাম্মদ আলী (বাল্ব) ও শফিকুল আলম (টর্চলাইট)। ৮ নং ওয়ার্ডে আব্দুল কুদ্দুস (টর্চলাইট), একরাম আলী (আখেরআটি), বাবুল আক্তার (হাতুড়ি), শরিফুল ইসলাম (মোটর গাড়ি) ও শাহ আলম (ডাব)। ৯ নং ওয়ার্ডে একরামুল হক (বালতি), এএসএম কবির (আখেরআটি) ও সাহেব আলী শিকদার (ডাব)। ১০ নং ওয়ার্ডে আব্দুর রহমান (বেলচা), ইয়ামিন হক (আখেরআটি), মতিয়ার রহমান (বালতি) ও সিরাজুল ইসলাম (ডাব) এবং ১১ নং ওয়ার্ডে আব্দুল আজিজ (ডাব), আব্দুর রাজ্জাক (আখেরআটি) ও শফিকুল ইসলাম (হাতুড়ি) প্রতীকে। ১ হাজার ২শ ভোটার গোপন ব্যালোটের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।